‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আসলে কেউ ঘরে বসে থাকবে না’

ঢাবিতে মানববন্ধন
ঢাবিতে মানববন্ধন  © টিডিসি ফটো

‘‘ফ্রান্সে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রচার করা হয়েছে। আমরা এখানে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে বাক স্বাধীনতা চর্চা করা যাবে না। এমনভাবে এটি চর্চা করতে হবে যাতে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না আসে। সবাই যেন স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারে।’’

সম্প্রতি ফ্রান্সে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটাক্ষ করে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনীর প্রতিবাদে আজ রোববার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারের এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

বক্তারা বলেন, মুসলিম সম্প্রদায় নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে তাদের নয়নের মনি কোঠায় স্থান দিয়েছে। সেক্ষেত্রে অন্য ধর্মের কেউ যদি এমন একজনকে ধর্মী নেতা ও শেষ নবীকে জঙ্গি কিংবা অন্য কোন ভাষায় প্রকাশ করেন যেটা তার সঙ্গে যায় না; সেখানে ধর্মীয়ভাবে বিশ্বাসী মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত আসবেই। আর তখনি কিন্তু প্রতিবাদ হবে, বিক্ষোভ হবে। মুসলান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আসলে কেউ ঘরে বসে থাকবে না।

মানববন্ধনের বক্তারা বলেন, আপনারা যদি একজন ধর্মীয় নেতাকে কটূক্তি করে বাক স্বাধীনতা চর্চা করতে চান, তাহলে এটা কোনভাবেই করতে দেয়া হবে না। একইসঙ্গে আপনাদের কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবাদ করলে যদি বলেন আপনাদের বাক স্বাধীনতা চার্চায় বাধা দেয়া হচ্ছে; তাহলে সেটাও আপনাদের ভুল। ফ্রান্সে শার্লি এবদো যদি ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করতে পারে তাহলে আমরাও মনে করি মুসলমানদেরও এসবের বিরুদ্ধে কিছু করার সময় এসেছে।

কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। কর্মসূচি থেকে বক্তারা নিজ নিজ ধর্ম পালনে স্বাধীনতার বিষয়ে গুরত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন।

গত ১৬ অক্টোবর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের শহরতলী এলাকায় এক স্কুলশিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করা হয়। হত্যাকারী সম্পর্কে পুলিশ জানায়, হামলাকারীর বয়স ১৮ বছর। তিনি চেচেন জাতিগোষ্ঠীর এবং জন্ম রাশিয়ার মস্কোতে। নিহত ওই শিক্ষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতেন। ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’ ক্লাসে তিনি শিক্ষার্থীদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন দেখিয়ে ছিলেন। তার পর তাকে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনার পর ফ্রান্সের পুলিশ দেশটির অন্তত ৫০টি মসজিদ ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ভয়াবহ অভিযান চালায়। সাড়ে পাঁচ বছর আগে হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিতর্কিত কার্টুন ছাপানোর পর ফ্রান্সের ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি এবদোতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। আবারও সেটি ছাপিয়েছে ম্যাগাজিনটি। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলেও এর পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরোঁ।


সর্বশেষ সংবাদ