নুর-মামুনদের বিরুদ্ধে মামলা: প্রধান আসামিদের ধরার চেষ্টায় পুলিশ

নুর ও মামুন
নুর ও মামুন  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ছাত্র অধিকার পরিষদের ৬ নেতা বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলার ১৭ দিনেও গ্রেপ্তার না হওয়ায় মামলার বাদী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের চেষ্টায় কোনো ঘাটতি নেই।

পুলিশের ভাষ্য, এ মামলায় তাদের মনোযোগ দুই প্রধান আসামি হাসান আল মামুন ও নাজমুল হাসান সোহাগকে নিয়ে। যারা পলাতক বলে দাবি তাদের।

আর ৬ আসামির মধ্যে নুরকে গত কয়েক দিনে ছাত্র অধিকার পরিষদের ধর্ষণবিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত দেখা গেলেও পুলিশ বলছে, তার বিষয়ে অভিযোগগুলোও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক ছাত্রী ধর্ষণ, অপহরণ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চরিত্রহননের অভিযোগে গত ২১ ও ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ ও কোতোয়ালি থানায় নুরুল হক নুর ও তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন।

ওই দুটি মামলা করা হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। পরে শাহবাগ থানায় তিনি আরেকটি মামলা করেন ‘সাইবার বুলিংয়ের’ অভিযোগে। কিন্তু আসামিদের কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে তিনি অনশন শুরু করেন।

অনশনের তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি মামলা করেছি ১৭ দিন আগে। পুলিশ চাইলে যে কোনো সময় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারে। এতদিন পরেও কেন কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? আমার মনে হয় পুলিশ প্রভাবিত। আসামিরা তো প্রভাবশালী বটেই। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বা কোনো অদৃশ্য শক্তির বলে আসামিরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না।

লালবাগ ও কোতোয়ালি থানার দুই মামলার তদন্ত থানা পুলিশই করছে। আর শাহবাগ থানার মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি ইউনিট।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পুলিশ মাঠে কাজ করছে। তবে যার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মূল অভিযোগ, সেই নাজমুল হাসান সোহাগকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত প্রক্রিয়ায় যেভাবে প্রয়োজন হবে, বাকিদের বিষয়েও সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

লালবাগ থানার ওসি মে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, এ মামলার প্রধান আসামি হাসান আল মামুন পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাকি আসামিদের ব্যাপারেও আমাদের তদন্ত চলছে। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আসামিদের মধ্যে ৫ জনকে গত কিছুদিনে প্রকাশ্যে দেখা না গেলও নুর নিয়মিতভাবে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আসছেন, সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলছেন।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) মো. ওয়ালিদ হোসেন বলেন, মামলা হওয়ার পর বিবাদীকে সাথে সাথে গ্রেপ্তার করার কোনো বিধান বা বাধ্যবাধকতা নেই। অভিযোগ কতটুকু সঠিক তা দেখতে হয়। আমরা সেটাই দেখছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাবির ওই ছাত্রীর করা প্রথম মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাসান আল মামুনকে, যিনি এতদিন ধরে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। আর দ্বিতীয় মামলার প্রধান আসামি সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ।

নুরসহ সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা ও কর্মী আবদুল্লাহ হিল বাকিকেও দুই মামলাতেই আসামি করা হয়েছে। দুই এজাহারেই নুরের নাম এসেছে ৩ নম্বরে।


সর্বশেষ সংবাদ