করোনা উপেক্ষা করে মাসব্যাপী ফুটবল টুর্নামেন্ট জাবিতে
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আতঙ্কে সারাদেশের শিক্ষা কার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চলছে মাসব্যাপী ফুটবল টুর্নামেন্ট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল এলাকায় কর্মচারী কোয়ার্টার সংলগ্ন মাঠে চলছে এ টুর্নামেন্ট। আরও নিয়মিত খেলাধুলা চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, জাহাঙ্গীরনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠসহ অন্যান্য খেলার মাঠে।
সরেজমিনে দেখা যায়, খেলা চলাকালীন বিশমাইল-রাঙ্গামাটি মাঠে পাঁচ শতাধিক দর্শক উপস্থিত। দর্শক সারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও গার্মেন্টস কর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী লোকজনকে দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্ব মানা, মাস্ক পরিধান কিংবা স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না কারও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থানরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা এ খেলার আয়োজন করেছে। ‘শেখ রাসেল টুর্নামেন্ট’ নামে আয়োজিত এ খেলায় অংশগ্রহণ করেছে ক্যাম্পাস ও বাইরে অবস্থানরত বিভিন্ন দল। দর্শক সারিতে ভিড় করেন ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে আসা শত শত দর্শনার্থী।
আবাসিক এলাকার কয়েকজন এ খেলা বন্ধ করার অনুরোধ করলেও কর্ণপাত করেননি কেউ। জনসমাগম সৃষ্টিকারী এ টুর্নামেন্ট করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
খেলা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নাকের ডগায় মাসব্যাপী টুর্নামেন্ট চললেও কেউ ভ্রুক্ষেপ করছেন না। প্রশাসনকে জানালেও খেলা বন্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এদিকে খেলা চলাকালীন সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় বেশ কয়েকজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর এসেছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মেডিকেল অফিসার মো. শামসুর রহমান বলেন, এ ধরনের জনসমাগম অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। খেলার মাঠে এবং দর্শক সারিতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। তাছাড়া এখানে বহিরাগতদের মধ্যে ভাইরাস বহনকারী কেউ আছেন কি না যাছাই করাও হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) নূরুল আলম বলেন, অভিযোগ আসার পরে খেলা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমি রেজিস্ট্রারের সাথে এ বিষয়ে আলাপ করব।
প্রসঙ্গত, এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মেডিকেল কর্মকর্তাসহ আবাসিক এলাকায় অবস্থানরত অন্তত তিনজন মারা গেছেন। এছাড়া শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ অন্তত ১২ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে।