নেই অফিসিয়াল ইমেইল, বিদেশে পড়াশোনায় ভোগান্তি রাবি শিক্ষার্থীদের

  © টিডিসি ফটো

দেশের বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আছে অফিসিয়াল বা প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল আইডি। শিক্ষার্থীদের বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা, গবেষণা, গবেষণাপত্র প্রকাশ এবং অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনাকে আরো ত্বরান্বিত করে এসব ইমেইল আইডি। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৬৮ বছরে এসেও শিক্ষার্থীদের জন্য অফিশিয়াল ইমেইল ব্যবহারের সুযোগ উন্মুক্ত হয়নি রাবিতে। ফলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জানা গেছে, অফিসিয়াল ইমেইল ব্যবহার করে স্কলারশিপ ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার আবেদন সহজ হয়। গবেষণায় সব ধরনের সুযোগ পাওয়া, রিসার্চ পেপার প্রকাশ তুলনামূলক সহজ হয়। সাথে সাথে যে কোন গবেষণায় সহজে ফান্ডিং এর আবেদন করা যায়। অনেক দামি দামি সফটওয়্যার বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে কেনাসহ আরও অনেক সুবিধা রয়েছে, যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এজন্য দ্রুত অফিশিয়াল ইমেইল উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছে তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাবির অফিসিয়াল মেইল আছে। তবে তা শুধুমাত্র শিক্ষকরা ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য এটি এখনো উন্মুক্ত করা হয়নি।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রভাষক গৌতম রায় বলেন, ‘একটা শিক্ষার্থী যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, বিশ্ববিদ্যালয়েরই উচিত তার শিক্ষার্থীদের ইমেইল আইডি প্রোভাইড করা। কারণ এটা তার পরিচয় বহন করে। এটা সে অফিসিয়াল যোগাযোগে ব্যবহার করে নানান সুবিধা পাবে। এখন পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে সেটা দেয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘একজন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তার একটা বড় প্রমাণ হচ্ছে তার একটা আইডি কার্ড থাকে। তেমনিভাবে যখন সে বাইরে যোগাযোগ করবে তখন সে যদি ইউনিভার্সিটির ইমেইল দিয়ে যোগাযোগ করে তাহলে সেটার ভিন্ন ধরনের একটা গুরুত্ব থাকে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এটাকে আরো বেশি গুরুত্ব দেবে। এর বাইরে অনেক সময় বিভিন্ন কোম্পানি অফার দেয়, অফারগুলো অফিসিয়াল মেইল ব্যবহার করা শিক্ষার্থীরা কম খরচে বা বিনা খরচে পেতে পারে।’

তবে বর্তমানে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে ইমেইলের ব্যবহারের বিকল্প নেই উল্লেখ করে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিয়া তাবাসসুম বলেন, ‘উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সাধারণ ইমেইলের চেয়ে ইনস্টিটিউশনাল ইমেইল বেশি গ্রহণযোগ্যতা পায়। শিক্ষার্থীরা এর যথাযথ ব্যবহার করে নিজের অবস্থানকে আরও জোরদার করতে পারে। তাছাড়া যেসব ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে গুনতে হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ, সেখানে এটা একজন শিক্ষার্থী একই ধরনের সেবা পেতে পারেন অনেক কম খরচে অথবা বিনা খরচে।’

দ্রুত এই ইমেল সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানিয়ে ফিসারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এম এ আশিক রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল বা ইন্সটিটিউশনাল ইমেইল আইডি একজন শিক্ষার্থীর জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা অনেকেই জানেন না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও আজ পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর জন্য অফিসিয়াল ইমেইল আইডি প্রোভাইড করতে পারেনি। যেখান প্রাইভেটসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় অনেক আগেই শুরু করেছে।’

তিনি বলেন, ‘দ্রুত এই ইমেইল সবার মাঝে উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। তাছাড়া অনেক প্রফেসর অফিসিয়াল বা ইন্সটিটিউশনাল ইমেইল ছাড়া অন্য মেইল চেক করেন না। গবেষণায় ক্যারিয়ার গড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ