২৬ আগস্ট ২০২০, ২০:৫১

মুখ থুবড়ে পড়ছে রাবির অনলাইন ক্লাস

  © ফাইল ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনদিন কমে আসছে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার। এখন পর্যন্ত যারা যুক্ত হচ্ছেন তারাও ডিভাইস, ডাটা, বিদ্যুতের লুকোচুরিতে অতিষ্ঠ হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। নবীন শিক্ষকদের কেউ কেউ ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে সামলে নিলেও ক্লাস বিমুখ হচ্ছেন প্রবীণ শিক্ষকরা। ফলে একরকম মুখ থুবড়ে পড়ছে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের ডিন অধ্যাপক ফখরুল ইসলাম বলেন, ঈদের পর থেকে উপস্থিতির হার ৩০-৩২ শতাংশে নেমে এসেছে। এর পেছনে শিক্ষার্থীদেরও নানান সমস্যা উঠে আসছে, কারো বাড়িতে বন্যা, কারো বিদ্যুৎ নাই, ডিভাইস নাই, স্পিড পাচ্ছে না। এসব নানা সমস্যায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসগুলোতে ঠিকমতো উপস্থিত হতে পারছে না।

দেখুন: তড়িঘড়ি করে অনলাইন ক্লাস, বিপাকে রাবি শিক্ষার্থীরা

তিনি বলেন, শিক্ষক হিসেবে এটা আমাদের জন্য অস্বস্তিকর কারণ। আমাদের তো সবাইকে নিয়ে ক্লাস করার কথা। সেখানে বিভিন্ন কারণে ৫-১০ শতাংশ শিক্ষার্থী আসবে না সেটাও হয়, কিন্তু অর্ধেকও আসবে না সে অবস্থায় ক্লাস নেয়া স্বস্তিদায়ক কথা নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. লায়লা আরজুমান বানু বলেন, ‘অনলাইন ক্লাস শুরু হলে শিক্ষার্থী উপস্থিতি অর্ধেকের বেশি ছিলো। তবে ঈদের পর উপস্থিতি অনেক কমেছে। কখনও কখনও ১০০ জনের মধ্যে ১০-১৫ জন উপস্থিত হচ্ছে। ক্লাসের আবহ পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক সময় ব্যক্তিগত আলাপ-আলোচনায় ক্লাস চলে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে ক্লাসের সেই পরিবেশ না পাওয়ায় এখন ক্লাসে যাচ্ছি না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ ইমতিয়াজ বলেন, অনলাইন ক্লাস একধরনের অপচয়। অন্যরা ক্লাস করাচ্ছে তাই আমি না করলে কেমন দেখায় সেই দেখাদেখি ক্লাসে যাচ্ছেন অনেকে। বিভাগে মোট ২৭ জন শিক্ষকের প্রায় অর্ধেক শিক্ষক ক্লাস নেওয়া বন্ধ করেছেন বলে জানান এ অধ্যাপক।

পড়ুন: প্রথম দিনের অনলাইন ক্লাসে ৮০ শতাংশ উপস্থিতি পেয়েছে রাবি

এর কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, একটা ক্লাসে নির্দিষ্ট বিষয় বুঝানোর জন্য আরও বিভিন্ন বাস্তব বিষয়ের উদাহরণ দিয়ে থাকি। তবে অনলাইনে সেটি নিয়ে আসা যায় না। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরাও বাধ্য হয়ে ক্লাসে আসছে। এর মধ্যে ক্লাসে কেউ ঘুমাচ্ছে, কেউ ক্লাস অন করে বাইরে ঘুরতে গেছে, কেউ বা অন্য কাজে ব্যস্ত। ক্যামেরার মধ্যে ছাত্রের মা, বাবা আসতেছে, ছোট্ট বাচ্চা আসতেছে।

তাই ধরনের অনলাইন ক্লাস অর্থহীন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যদি ক্লাস করতে হয় তাহলে কোর্স কারিকুলাম পরিবর্তন করতে হবে। অনলাইন ক্লাস ৩০ মিনিটের বেশি করা যাবে না’’।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় গত ০৯ জুলাই থেকে অনলাইন ক্লাসের ঘোষণা দেন রাবি উপাচার্য। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়টির বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিদের নিয়ে উপাচার্যের ভার্চুয়াল সভায় অনলাইন ক্লাস কার্যকরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।