২৪ জুলাই ২০২০, ১৩:৫৭

নকল মাস্ক: ঢাবির সেই সহকারী রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা

  © সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনা ইউনিটে নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক সরবরাহ করায় সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) রাতে বিএসএমএমইউ প্রক্টর বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানকে মূল আসামি করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৪ জুলাই) শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ত্রুটিপূর্ণ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলাটি করা হয়েছে।’

এর আগে বিএসএমএমইউ’র করোনা ইউনিটে নকল ‘এন৯৫’ মাস্ক সরবরাহ করা করা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। ‘অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান চীনের ‘থ্রিএম কোম্পানি’র লোগো বসিয়ে এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহ করে। পরে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারীর শারমিন জাহান।

পড়ুন: নকল মাস্ক সরবরাহ করেছেন ঢাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী শারমিন!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত শারমিন জাহান আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসের প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার শারমিন জাহান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমি যে প্রোডাক্ট দিয়েছি সেখানে অনেকে প্রডাক্ট দিয়েছে। প্রোডাক্টগুলো ল্যাবে পরীক্ষা করার পরে আমরা প্রথম হয়েছি। সে প্রেক্ষিতে তারা আমাকে ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছে। প্রথমে মাস্ক দেওয়ার পরে সবাই প্রশংসা করেছে। কিন্তু তৃতীয় লটের যে অর্ডার দেওয়া হয়েছে, এটা নকল কিনা, তা কিন্তু কোথাও টেস্ট করা হয়নি। নকল কিনা তাও অপ্রমাণিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমি কখনো নকল কোন প্রোডাক্ট শেয়ার করতে পারি না। আমি এটা জানার পরে সাথে সাথে ফেরত নিয়ে আসছি। আমি কোন বিল সাবমিট করিনি। অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল কোন মাস্ক বানায় না। এটা অয়্যার হাউজের ভুল। এজন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে।’

পণ্য রিসিভের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এই প্রোডাক্টটা ওইখানে রিসিভ করে রাখছে তারা। তারা কেন রিসিভ করে রাখল, এটা তাদের ভুল। তাদের ভুলটাকে কেন তারা আমার নামে চাপাচ্ছে। প্রোডাক্টটি আমার ফার্মের মাধ্যমে আসলেও আমি জানতাম না এ ব্যাপারে। আমি জানি আমার মাস্ক ভালো। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা সেটা জানি না। এখানে আমাকে কেন এভাবে ফাঁসানো হচ্ছে?’

জানা গেছে, শারমিন জাহানের জন্ম নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জে। যে কলেজ থেকে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন সেখানে ছাত্রলীগের ছাত্রী মিলনায়তন সম্পাদিকা ছিলেন। এরপর ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন।

পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পান। ১৯৯৮-৯৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে। থাকতেন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে। ২০০০ সালে তিনি হল ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন।

পরে ২০০২ সালে হল সভাপতি হন। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের মহিলা ও শিশুবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটিতে ছিলেন তিনি। তার আগের মেয়াদে কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন।