২৩ জুলাই ২০২০, ২১:৩৪

ভালোবাসার ক্যাম্পাসে ফেরার অপেক্ষায় দিন গুণছে তাঁরা

  © টিডিসি ফটো

অদৃশ্য এক ভাইরাসের প্রকোপে স্থবির গোটা বিশ্ব। প্রতিদিন বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিলও। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঘরবন্দি শিক্ষার্থীরা।

যেখানে শিক্ষার্থীরা পদচারণায় সব ক্যাম্পাস মুখরিত থাকতো সেখানে এ করোনাকালে ‘লকডাউন’ নামক চার দেয়ালের মাঝে আবদ্ধ তারা। ঘরবন্দির একঘেয়েমি আর ভালো লাগছে না তাদের। তারা সুস্থ পৃথীবিতে আবার সেই চিরচেনা স্ব-স্ব বিদ্যাপীঠে ফিরতে চায়। ভালোবাসায় রাঙানো কাছের মানুষগুলোর সাথে আড্ডা দিতে চায়। নিজ ক্যাম্পাসে ফেরার অপেক্ষায় থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থীরা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের কথাগুলো তুলে ধরছেন রেদওয়ান রাকিব—

যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যার সিন্ধু ছেঁচে মুক্ত আহরণের প্রান্তকর চেষ্টা অব্যাহত রাখার কথা ছিল সেই মুহূর্তে আজ আমরা ঘরবন্দি। প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির সবটুকুই আজ প্রতীক্ষায়। মিনতি জানাই, হে প্রকৃতি রানী সুস্থ হও, মধ্যবিত্তের স্বপ্নপূরণের এখনো যে রয়ে গেছে বাঁকি। হে প্রিয় ক্যাম্পাসের ১৭৫ একর তোমার বুকে টেনে আমায় আবারও আলিঙ্গন করো। তোমার সবুজ খাতার পাতায় আবারও আঁচড় কেটে আঁকিবুঁকির সুযোগ করে দাও।

—রাজু, বাংলা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

করোনার এই ভয়াল থাবা না থাকলে আজ হয়তো টিএসসি হয়ে উঠতো হাজারো স্বপ্নবাজদের মিলনস্থল। কার্জনের সবুজ ঘাস, শহীদুল্লাহর পুকুর পাড়, কলা ভবনের সামনের বটতলা আর এফবিএসের সামনের সবুজ চত্ত্বর হয়ে উঠতো জ্ঞান অন্বেষণকারীদের ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া হাজারো আড্ডার স্বাক্ষী।

প্রতিটি সকাল শুরু হতো লাইব্রেরির সামনে রাখা সারি সারি ব্যাগের মাধ্যমে। কিন্তু বাস্তবতা আজ প্রতীক্ষায় রুপ নিয়েছে। অব্যক্ত মনের প্রার্থনা একটাই, সুস্থ হোক বসুমতী, সুস্থ হোক বঙ্গ জননী। হাজারো তরুণ-তরুণীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠুক ৬০০ একরের প্রিয় ক্যাম্পাস, টগবগিয়ে চলুক স্বপ্নের লালবাস।

—সাহিনুর রহমান, ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

চিরচেনা সেই বিদ্যাপীঠ আর ভালোবাসার মানুষগুলোকে দেখিনা অনেকদিন। কিন্তু আজ ঘরে বসে সোনালী অতীতগুলো মনে করা ছাড়া আর কিছু করার নেই আমাদের। প্রতিক্ষণেই হৃদয়ে একটা ভয় জাগ্রত করে, প্রিয়জনদের সাথে আবার দেখা হবে কিনা। ক্যাম্পাসে ফিরে ক্লাসে আবার সবাইকে পাবো কিনা। সেই রঙিন ও উৎসবমুখর দিন ফিরে পাবো কিনা। ঘরবন্দি আর কতদিন থাকা যায়। এখন সুদিনের অপক্ষোর প্রহর গুনছি। প্রার্থনা করি পৃথিবী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। সবাই সুস্থ থাকুক।

—আব্দুস সালাম শান্ত, ইংরেজী বিভাগ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

ঘরবন্দি জীবন ছেড়ে ক্লাস রুমে ফিরতে চাই। বন্ধুু-বান্ধবীদের সাথে আড্ডা,গান এবং খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই। আবারও ক্লাস-পরীক্ষা পড়াশুনা নিয়ে সময় পার করতে চাই।

—ওলিউর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

একটি অপরিচিত ক্যাম্পাস যেন জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। এখন অপেক্ষার বিশাল পাহাড় যেন কোনভাবেই শেষ হচ্ছে না। প্রতিটা মূহুর্তে যেনো বিশাল স্মৃতির মরূভুমি হয়ে যাচ্ছে। আর মূহুর্তে মূহুর্তে হৃদয়ে নাড়া দেয় প্রাণের ক্যাম্পাসে ফেরার আকুলতা।

—তৌফিকুর রহমান, ফিন্যান্স বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়