২১ নভেম্বর ২০২৫, ২২:১০

রাত্রিযাপনের উদ্দেশ্যে কাঁথা-কম্বল নিয়ে কর্মচারী ভবনে মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা

কর্মচারী ভবনে মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা জহুরুল হক হল সংলগ্ন কর্মচারী ভবনে দুপুর থেকে অবস্থান  করছেন। নিজেদের কাঁথা-কম্বল সঙ্গে নিয়ে ভবনের কয়েকটি কক্ষ দখল করে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থাও করেছেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবি, নতুন হল বরাদ্দ না দিলে কর্মচারী ভবন থেকে সরবেন না তারা।

আজ শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ভূমিকম্প আতঙ্কে মুহসীন হল থেকে লাফ দিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হলে অন্য শিক্ষার্থীরা কর্মচারী ভবন অবরোধ করে সেখানে নিজেদের জন্য সিট বরাদ্দের দাবি তোলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড নিয়াজ আহমেদ খান তাদের হলে চলে যেতে বললেও তারা ফিরেননি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কর্মচারী ভবন স্বাধীনতা টাওয়ারের ২, ৫, ১১, ১৪, ১৮ ও ১৯ তলায় খালি কক্ষগুলোতে মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। ৫ম তলার কয়েকটি রুমে জহুরুল হক হল ও মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা একত্রে দখল নিয়েছেন। এছাড়াও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তালা ভেঙে রুমে ঢুকতেও দেখা গেছে।

মুহসীন হলের ২০২২- ২৩ সেশনের শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি এখান থেকে যাব না। দরকার হয় আমি ভিসি স্যারের বাসায় গিয়ে উঠব, তবুও হলে যাব না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান স্টেকহোল্ডার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীর কারণেই শিক্ষক আসেন এবং শিক্ষকদের কারণেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু আমরা সরেজমিনে দেখছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে নেই, বরং এটি এখন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা পড়াশোনা করি কেন? জীবনের জন্য করি। আর যদি পড়াশোনা করতে গিয়ে আমাদের জীবনটাই ঝুঁকিতে পড়ে, তাহলে তো সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা প্রশাসনকে বারবার বিষয়টি জানাচ্ছি, চাপ প্রয়োগ করছি, কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর সমাধান দিতে পারেনি।

আশিকুর বলেন, যতদিন পর্যন্ত মুহসীন হলে নতুন ভবন নির্মাণ না হবে, ততদিন আমরা এখানে থাকব। ভবনটি তৈরি হয়ে গেলে আমরা আবার হলে ফিরে যাব। এখানে থাকার বিষয়টি স্থায়ী নয়। আমরা কর্মচারীদেরও হটাতে চাই না। তাদের বেতন-ভাতা আছে, তারা নয় মাস বাইরে থেকেও দায়িত্ব পালন করতে পারেন। আমাদের অবস্থান পুরোপুরি জীবনরক্ষার জন্য। এর বাইরে আর কিছু নয়।

মুহসীন হল সংসদের সমাজসেবা সম্পাদক মো. সাইফুল্লাহ বলেন, কর্মচারীদের ভবন স্বাধীনতা টাওয়ারের যে রুমগুলো খালি সে রুমগুলোতে মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছে। আমাদেরকে নতুন ভবন না দেওয়া পর্যন্ত আমরা ওই মৃত্যুপুরীতে যাব না। আজকে থেকে মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা এখানেই থাকবে।