০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:২৩

শিক্ষকতার ওপরে কোনো পেশা নেই: রাবি উপাচার্য

ড. সালেহ্ হাসান নকীব  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেছেন, ‘আমার মতে, শিক্ষকতার ওপরে কোনো পেশা নেই। সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করে শিক্ষকতা করলে এর চেয়ে মহান পেশা আর হতে পারে না। এ পেশার মাধ্যমে আমরা মানুষের জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাই। একজন শিক্ষক হওয়া নিঃসন্দেহে ভাগ্যের একটি ভাগ্যের ব্যাপার।’

রবিবার (২ নভেম্বর) রাবিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে শিক্ষক সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

উপাচার্য বলেন, গতবছরও আমরা তিনজন শিক্ষককে এ গুণী শিক্ষকের সম্মাননা দিয়েছিলাম। এ বছরেও আমরা তিনজন গুণী এবং শিক্ষককে মনোনীত করেছি। এ আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত এবং যাদের আমরা সম্মাননা দিয়েছি তারাও অত্যন্ত যোগ্য। আমরা আমাদের প্রত্যেক গুণী শিক্ষককে সম্মানিত করার এমন ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আজকে যেই তিনজন সম্মানিত শিক্ষক আছেন এর মধ্যে প্রফেসর নজরুল ইসলাম আমার ক্লাসরুম সিক্ষক। তিনি আমাকে অনেক কিছুর শিক্ষা দিয়েছেন এবং তার থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছিলাম আমি। আমি সারাজীবনে কখনও এইম ইন লাইফ রচনা লিখি নাই। কেন লিখি নাই এটি মনে হলে এখন হাসির সাথে ভালো অনুভূতিও আসে। এটি লিখি নাই মানে যে আমার লাইফে এইম নেই এমনটা না। আমি এইম ইন লাইফ লিখতাম না কারণ, আমি যদি লিখি তাহলে সেখানে আমার এমন কিছু লিখতে হতো যেইটা হয়ত মিথ্যা। আমি কখনও বিতর্কেও অংশগ্রহণ করতাম না, কারণ বিতর্কে মাঝে মাঝে এমন কিছু বলতে হয় যেটার কোনো মানে নেই। কখনও কখনও ভালো কিছুর বিপক্ষেও বলতে হয় যার কোনো মানে নেই।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান। তিনি বলেন, ‘শিক্ষক’ শব্দটি এমনই এক শব্দ, যা শুনলে আমাদের ভেতরটা কেঁপে ওঠে, সম্মান নিজে থেকেই অনুভূত হয়। শিক্ষকতা একটি সম্মানজনক পেশা, আর ছোটবেলা থেকেই শিক্ষকদের দেখলে আমরা এক ধরনের শ্রদ্ধামিশ্রিত ভীতি অনুভব করতাম; দূর থেকে কোনো শিক্ষককে দেখলে অনেক সময়ই অন্যদিকে সরে যেতাম। একজন শিক্ষক একজন মানুষকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে পারেন, শিক্ষার্থীর ভেতরে লুকিয়ে থাকা প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলতে পারেন। একজন শিক্ষক তার শিক্ষার্থীর গভীরে প্রবেশ করে তাকে সবচেয়ে ভালোভাবে বুঝতে পারেন, যা অন্য কেউ পারে না। একজন আদর্শ মানুষ গড়ে তুলতে শিক্ষকের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—শিক্ষকই শিক্ষার্থীর চরিত্র, মনন ও ভবিষ্যৎ নির্মাণে প্রথম পথপ্রদর্শক।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষককে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আজকে যে তিনজন সংবর্ধনা পেয়েছেন তারা অত্যন্ত গুণী মানুষ। তারা আমাদের অনুপ্রেরণা। তাদের থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। আজকের অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, বিশ্ব শিক্ষক দিবস সাধারণত গত ৫ অক্টোবর পালিত হয়, তবে প্রশাসনিক ব্যস্ততার কারণে এ বছর অনুষ্ঠানটি ২ নভেম্বর আয়োজন করা হয়েছে।