BRANDrill 5.0-এর গ্র্যান্ড ফাইনালে বিজয়ী ‘টিম ঝালমুড়ি’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থীদের পরিচালিত দেশের বৃহত্তম শিক্ষার্থী-নিয়ন্ত্রিত বিজনেস পাবলিকেশন ক্লাব ভয়েস অব বিজনেস (ভিওবি) আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের ব্র্যান্ডিং কেস প্রতিযোগিতা ‘BRANDrill 5.0’-এর গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) তেজগাঁয়ের এম্পিরিয়ান হোটেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন হয় ‘টিম ঝালমুড়ি’।
প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ দলগুলো অংশ নেয় এবং ব্র্যান্ডিং সংক্রান্ত সৃজনশীল ও কৌশলগত সমাধান উপস্থাপন করে একদল বিশিষ্ট একাডেমিক ও কর্পোরেট বিচারকের সামনে।
এ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ দলগুলো অংশ নেয় এবং ব্র্যান্ডিং সংক্রান্ত সৃজনশীল ও কৌশলগত সমাধান উপস্থাপন করে একদল বিশিষ্ট একাডেমিক ও কর্পোরেট বিচারকের সামনে।
ফাইনাল রাউন্ডের প্রেজেন্টেশন শুরু হয় টিম স্কাইফল দিয়ে। এরপর টিম শিঙ্গাড়া সিন্ডিকেট, টিম লো এফোর্ট, টিম স্ম্যাশ্ড বার্গার, এবং সর্বশেষে টিম ঝালমুড়ি। প্রতিটি দল তাদের উদ্ভাবনী ব্র্যান্ড কৌশল ও সৃজনশীল আইএমসি আইডিয়া দিয়ে বিচারকদের মুগ্ধ করে।
বিচারক প্যানেলে উপস্থিত ছিলেন মো. সাইমুম হোসাইন, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবসা প্রধান, গিকি সোশ্যাল; মো. ইফতেখার আলম, উপ-পরিচালক (ব্র্যান্ড ও মার্কেট কমিউনিকেশন), গ্রামীণফোন; এবং জাফর উদ্দিন সিদ্দিকী, নির্বাহী পরিচালক (মার্কেটিং ও সেলস), সিটি গ্রুপ।
বিচারক মো. সাইমুম হোসাইন বলেন, ‘প্রতিটি দলই অসাধারণ ছিল, শুধুমাত্র একটি দলকে চ্যাম্পিয়ন করা আমাদের জন্য খুব কঠিন ছিল। আমি বিশ্বাস করি, ম্যানেজাররা শুধু ক্লাসরুমে নয়, বরং এই ধরনের ইভেন্ট ও মঞ্চেই তৈরি হয়।’
অন্য বিচারক মো. ইফতেখার আলম যোগ করেন, ‘এ প্রেজেন্টেশনগুলো অনুপ্রেরণাদায়ক। ১০–১৫ বছর আগে আমরা এতটা দক্ষ ছিলাম না। আজকের এই তরুণরা আইডিয়া আর সাহসে ভরপুর— আমি নিজেও আজ তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’
গ্র্যান্ড ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয় টিম ঝালমুড়ি, প্রথম রানার-আপ হয় টিম স্কাইফল, এবং দ্বিতীয় রানার-আপ হয় টিম স্ম্যাশ্ড বার্গার। এছাড়াও বাকি ফাইনালিস্টদেরও পুরস্কৃত করা হয় তাদের অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য। ভিওবির সাধারণ সম্পাদক ইবাসতুম সুরাইয়া বলেন, “ব্র্যান্ড্রিল হলো ভয়েস অব বিজনেস আয়োজিত একটি জাতীয় পর্যায়ের ব্র্যান্ডিং কেস প্রতিযোগিতা, যা তরুণদের লুকিয়ে থাকা প্রতিভা ও সৃজনশীলতাকে আবিষ্কারের সুযোগ করে দেয়।
এ বছর মোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন, যাদের মধ্য থেকে আমরা ছয়টি ফাইনালিস্ট দল নির্বাচন করেছি। আমাদের বিচারক, স্পনসর ও মেন্টরদের দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি ধন্যবাদ জানাই ভিওবির সদস্যদের, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ব্র্যান্ড্রিল ৫.০ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাদের ছাড়া আমরা এতদূর আসতে পারতাম না। চলুন, সবাই মিলে এই ‘ড্রিল’ চলমান রাখি!”
জনসংযোগ বিভাগের হেড ফাহিম ফারদিন খান লাজিম বলেন, “BRANDrill শিক্ষার্থীদের দক্ষতা, সৃজনশীলতা এবং কৌশলগত চিন্তাভাবনা প্রদর্শনের একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। এবারের আসরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে প্রতিক্রিয়া ও উদ্দীপনা আমরা পেয়েছি, তা আমাদের সত্যিই আনন্দিত করেছে। ভয়েস অফ বিজনেস সবসময় শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই ও বাস্তব জীবনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে এবং তাদের সামর্থ্য বিকাশে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” এবং “BRANDrill একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম, যা একাডেমিক জ্ঞানকে বাস্তব জীবনের ব্র্যান্ডিং চ্যালেঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত করে। পার্টনারদের সহযোগিতায় এই বছরের আয়োজন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আমি VoB-তে যোগ দিয়েছিলাম এ সিগনেচার ইভেন্টের কারণেই, আর আমি আনন্দিত যে এটি সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে,” বলেন জনসংযোগ বিভাগের ডেপুটি হেড মোহাম্মাদ সিয়াম মাহবুব।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করা ব্র্যান্ড্রিল এখন দেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ও আলোচিত ব্র্যান্ডিং কেস প্রতিযোগিতা, যা তরুণ মার্কেটারদের বাস্তব ব্র্যান্ডিং চ্যালেঞ্জে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণের সুযোগ করে দেয়। এবারের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সরাসরি কাজ করার অভিজ্ঞতা ও নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ পেয়েছে। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ভয়েস অব বিজনেস হলো বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষার্থী-নিয়ন্ত্রিত বিজনেস পাবলিকেশন ক্লাব। একাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তোলা, তাদের ফ্ল্যাগশিপ ম্যাগাজিন এবং ব্র্যান্ড্রিল প্রতিযোগিতার মতো ইভেন্টের মাধ্যমে তারা ক্রমাগত তরুণ প্রজন্মকে কর্পোরেট বিশ্বের জন্য প্রস্তুত করছে।