জান্নাতুল ফেরদৌসের মৃত্যুর দায় নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে: জাবি অধ্যাপক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনার কাজে অংশ নিতে এসে মৃত্যু হয়েছে চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস মৌমিতার। আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল আটটার কিছু আগে ভোট গণনার জন্য সিনেট ভবনে এসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ মৃত্যুর জন্য নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন তার সহকর্মী শিক্ষক।
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও নবাব ফয়জুন্নেসা হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. সুলতানা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, “জাকসু নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনার কারণেই আমাদের এক সহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আরও এক সহকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কেন এই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনা করা হলো—এটাই আমার প্রশ্ন। যদি মেশিনে ভোট গণনা হতো, রাত ১০টার মধ্যেই ফলাফল পাওয়া যেত। তখন সহকর্মীকে বাড়ি থেকে ডেকে আনতে হতো না। তাঁর অকাল মৃত্যু আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “জাকসুর মতবিনিময় সভায় জানানো হয়েছিল, ভোট মেশিনে কাস্ট হবে এবং দ্রুত গণনা সম্ভব হবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে জানানো হলো, ভোট গণনা ম্যানুয়ালি করা হবে। এই পদ্ধতিতে তিন দিনেও ভোট গণনা সম্ভব নয়। আমরা শিক্ষক, আমাদের পরিবার আছে, মানসিক ও শারীরিক চাপ আছে—এমন স্ট্রেস আমরা নিতে পারি না। তাই এ প্রক্রিয়ার পরিবর্তন চাই।”
ড. সুলতানা আক্তার দাবি করেন, এ মৃত্যুর দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে। পাশাপাশি তিনি জান্নাতুল ফেরদৌসের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবিও জানান। ভোট গণনা থেকে বিরত থাকবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা আমার সহকর্মীরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। তাঁরা আলোচনা করে ঠিক করবেন।”
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ছাত্রদল, বামজোট, ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠন এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তবে শেষ দিকে এসে বিভিন্ন অভিযোগে ছাত্রদল ও বামজোট নির্বাজন বয়কট করে। পাশাপাশি নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিন শিক্ষক। শুরু থেকেই নির্বাচনকে ঘিরে নানা অনিয়ম, কারচুপি ও প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা ও ২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা সেই প্রশ্নকে আরও জোরালো করে তুলেছে।