সেই জামায়াত নেতার বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাইল চবি প্রশাসন
‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না।’ সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম-৫ আসনের মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলামের এমন মন্তব্যের লিখিত ব্যাখ্যা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যারয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত, আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পাশ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার, জমিদারের উপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না’—গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংবাদের বিষয়ে এ পত্র পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে ওই নেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বুকের ওপর। আমরা এই জায়গার মালিক, তাই অন্যায় কিছু মেনে নেব না। আমাদের সম্মান করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের যথাযথ সম্মান না করে, তবে আমরা জনগণ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। তবে, ভিডিওটি গতকাল শুক্রবার রাতে ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে দুঃখপ্রকাশ করেছেন ওই জামায়াত নেতা। তিনি বলেন, ‘কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তির সম্মুখীন না হয়, ছাত্র-ছাত্রী এবং এলাকাবাসীদের সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করা, অপরাধী যে হোক তাকে শনাক্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা, অনেক নিরীহ মানুষের যাদের সাথে ঘটনার দূরতম সম্পর্কও নেই তাদের নামে মামলা হয়েছে, এ বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়া, সমস্যা সমাধান করে যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরে যাওয়া—এখানে বক্তব্যের কিছু অংশ অনেকের কাছে ভুলভাবে উপস্থাপিত হতে পারে। তবে এটি সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত।’
জামায়াত নেতা বলেন, ‘আমার শব্দচয়নে কিছুটা ভুল হতে পারে, তবে আমার উদ্দেশ্য এমনটি ছিলো না। আমি গত ১৬ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করেছি। শিক্ষার্থীরা জানে আমি তাদের কি পরিমাণ স্নেহ করি। আহত ছাত্রদের খোঁজ খবর নিয়েছি, সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করেছি। আমার বক্তব্যে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমি আমার শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকবো ইনশা আল্লাহ।’