শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলা: চবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে আজ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের দফায় দফায় হামলায় ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। আজ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) একদিনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রো-ভিসি একাডেমিক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। তিনি বলেন, ‘সোমবার সকল পরীক্ষা ও ক্লাস বন্ধ থাকবে।’
এর আগে ভাড়া বাসার দারোয়ান কর্তৃক এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন। আজ (সোমবার) দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত এ ধারা বলবৎ থাকবে।
গতকাল রাত পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষে অন্তত দেড় হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এরমধ্যে গুরুতর আহত শতাধিক শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রাজিউর রহমান রাজু ও নাইমুল ইসলামকে আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে।
গুরুতর আহতদের সারাদিন ১১টি ক্যাম্পাস বাসে চবি মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক (চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে তিন শতাধিক আহত শিক্ষার্থী চমেকে ভর্তি আছেন। বাকিরা চবি মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।
রবিবার রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডাক্তার ফারহানা ইয়াসমিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গতকাল শনিবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত আহত ১৫০০-এর বেশি। সারাদিন ১১টি ক্যাম্পাস বাসে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে গুরুতর আহত ছিল ১০০ জন এবং আশঙ্কাজনক ১০ জন। বাকিরা মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।
রবিবার দুপুর ১২টায় ফের শুরু হওয়া সংঘর্ষে নাইমুল জখম হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে চবি মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখা দিলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। অন্যদিকে রাজিউর রহমান রাজুকে সংঘর্ষ চলাকালে ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে স্থানীয়রা।
এ ছাড়া তিন শতাধিক আহত শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এদিকে চবি মেডিকেল সেন্টারেও আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে, দুপুর সাড়ে ৪টায় সংঘর্ষের প্রায় ৬ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে আসে যৌথবাহিনী। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। ক্যাম্পাসে এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
এর আগে, দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন। সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে।