জাবির হল থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বের করতে প্রশাসনের অভিযানে বাধা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলগুলোকে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বা অছাত্রমুক্ত করার লক্ষ্যে সময় বেঁধে দেওয়ার ঘোষণা দিতে এবং খালি কক্ষ সিলগালা করতে শনিবার রাতে অভিযান চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এ অভিযানের বিরোধিতা করে বাধা দিয়েছেন ছাত্রত্ব না থাকা শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, আরও সময় ও সুযোগ দিয়ে ধাপে ধাপে বের করতে হবে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চালানো এ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলমসহ অন্যান্য হলের প্রভোস্টবৃন্দ।
জানা যায়, আসন্ন জাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাস ও হলগুলোর পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতে প্রশাসনের পূর্বঘোষিত নির্দেশনা অনুযায়ী এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর আগে, ১০ আগস্ট জাকসুর তফশিল ঘোষণার দিন এক জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১৬ আগস্টের মধ্যে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের হল ছাড়া জন্য বলেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সময়ের মধ্যে অছাত্ররা হল ত্যাগ না করলে বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছিল বিজ্ঞপ্তিতে।
সুষ্ঠু জাকসু নির্বাচন আয়োজন ও পূর্বঘোষিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযানের অংশ হিসেবে প্রথমে কামাল উদ্দিন হলে যান। হলে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের দখলে যে-সব কক্ষ রয়েছে সেগুলোর তালা ভেঙ্গে সিলগালা করা হয় এবং এসময় কিছু কক্ষে উপস্থিত সাবেক কিছু শিক্ষার্থীর অনুরোধে তাদেরকে রবিবার সকাল ১০টার মধ্যে হলত্যাগের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে গাঁজাকাণ্ডে ছাত্রদল কর্মী আটক, ছাড়াতে প্রক্টর অফিসে নেতা!
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযান চলাকালে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া কিছু শিক্ষার্থী বাধার সৃষ্টি করেন। তারা দাবি করেন ব্যাচভিত্তিক ধাপে ধাপে বের করার জন্য। তারা আরও দাবি জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এর আগেও কয়েকবার হলগুলোকে অছাত্রমুকক্ত করার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। এসময় তারা অন্যান্য হল থেকে ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের বের করতে প্রশাসনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং একই সাথে সব হলে অভিযান চালানোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে কামাল উদ্দিন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, পূর্বঘোষিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আমরা শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলেছি। যে-সব কক্ষ খালি পেয়েছি সেগুলো তালা ভেঙে সিলগালা করা হয়েছে। যারা এখনও আছেন, তারা আশ্বাস দিয়েছেন আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যেই হলে থেকে বের হয়ে যাবেন।
তিনি আরও বলেন, সামনে জাকসু এবং এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪তম ব্যাচ ক্যাম্পাসে আসবে। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমরা অভিযান পরিচালনা করতেছি। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। এসময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিনি সহযোগিতামূলক আচরণ প্রত্যাশা করেন।