ছাত্রলীগ সভাপতি শোভনের নির্দেশে কনসার্ট মঞ্চে হামলা!
লোকসঙ্গীত ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী আয়োজিত কনসার্টস্থলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরীর কর্মীরা ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, কনসার্ট নিয়ে মতানৈক্য করেছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি। তিনি চেয়েছিলেন কনসার্ট যাতে না হয়। এ কারণেই তার নির্দেশে অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহায়তায় ওই কনসার্ট আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল। হামলার পর কনসার্ট বাতিলের গুঞ্জন উঠেছে।
এদিকে কনসার্টে হামলার ওই বিষয়টিকে কেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক হল ও ঢাকা কলেজে মারধর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা কলেজে সংগঠিত ওই হামলায় অন্তত ৭জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাত ২টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি বলেন, এটাকে পুজি করে প্রতিটি হল ও হলের বাইরে সমস্যার সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিভিন্ন হলে আমার কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে অভিযোগ করে বলেন, এখানে (মল চত্ত্বর) যারা ছিল; তাদের সবাই দেখেছে ছাত্রলীগ সভাপতি শোভনের কর্মীরা ওই কাজ করছে। তার (শোভন) নির্দেশেই এটা করা হয়েছে। সনজিত আরো বলেন, যারা পহেলা বৈশাখের কনসার্টে বাধা দেয়; তারা অন্তত স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হতে পারে না। এর সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের বিচার দাবি করেন তিনি।
ডাকসুর এজিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত ১৩ ও ১৪ এপ্রিলের অনুষ্ঠান যেন সুন্দরভাবে হয়; সেজন্য আমরা কাজ করব।
ডাকসুর জিএস ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, যারাই এ কাজ করেছে; তাদের বিচার করা হবে। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করতে হবে।
ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, প্রশাসন চাইলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এ ঘটনার বিচার করতে পারে। এ ঘটনার বিচার আমরা চাই। তিনি মনে করেন, প্রশাসন যদি বিচার চায়, তাহলে অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করবে।
তবে অনুসরাীদের হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি ঘটনার পর জানতে পেরেছি। যারা প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত; হয়তো তাদের সঙ্গে বহিরাগতদের কোন সমস্যার কারণে এই ভাঙচুর হতে পারে তিনি মরেন।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, এটাকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানো হচ্ছে। সামনে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি দিব। তার দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কেন্দ্রের তো একটি সমস্যা আগে থেকেই আছে। অন্যদিকে, ডাকসুর সাথে ছাত্রলীগের মোড় তৈরি করে আমাকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ডাকসু ও ছাত্রলীগের মনমালিন্যের কারণে এই বিষয়টা রাজনৈতিক ইস্যু বানানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেছিলেন, এটা কখনও কাম্য নয়। কারা এ ভাঙচুর করেছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বরে ডাকসু ও ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহযোগিতায় গত কয়েকদিন ধরেই এ আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল। আজ চৈত্র সংক্রান্তিতে ফোক সংগীত এবং কাল রবিবার বৈশাখী কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল। তবে এর আগেই শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই হামলায়, ফেস্টুন, বিজ্ঞাপন বুথ ও স্টলে ভাংচুর এবং আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।