ডেঙ্গুতে ছাত্রীর মৃত্যু, রাবি মেডিকেলের নাম দিল ‘নাপা সেন্টার’
গতকাল ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৌমিতা জামান মারা গেছেন। চিকিৎসা কেন্দ্রের অবহেলা ও প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা রাবি মেডিকেল সেন্টারের নাম পরিবর্তন করে ‘নাপা সেন্টার’ ব্যানার টাঙিয়ে দেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন করেন তারা। এরপর প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দেন। তারপর মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে যান তারা এবং সেখানে ‘নাপা সেন্টার’ ব্যানার টাঙিয়ে দেন।
মানববন্ধনে বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তন্দ্রা বলেন, ‘মৌমিতার এই মৃত্যু আমাদের জন্য অত্যন্ত শোকের। আমরা তার মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনকে দায়ী করি। কারণ ক্যাম্পাসে থাকা অবস্থায় রাবি চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে গেলে ডাক্তারকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রশাসন যদি আমাদের চিকিৎসা সহ মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে পারত, তাহলে আজ হয়ত মৌমিতার মৃত্যু হতো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্কয়ার, ইবনে সিনা সহ বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিতে যাচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু তাতে শিক্ষার্থীদের কী লাভ, তা দেখা যায় না। আমাদের প্রধান দাবি, মৌমিতা হত্যার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে এবং তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের সকল মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের সকল বিল্ডিং সহ হলে পর্যাপ্ত বাথরুমের ব্যবস্থা করতে হবে।’
দুঃখ প্রকাশ করে বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুল্লাহ নাঈম বলেন, ‘মৌমিতার অকাল মৃত্যু আমাদের জন্য গভীর শোকের ও ক্ষোভের বিষয়। জ্বর নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে গেলেও কোনো চিকিৎসা সে পায়নি। পরে কুষ্টিয়ায় নিয়ে গেলে জানা যায়, সে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত; কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, এটি প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা ও চিকিৎসা অব্যবস্থার ফল। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা চালু করতে হবে, মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আর কোনো মৌমিতার মৃত্যু দেখতে চাই না। সময় এসেছে জবাবদিহির।’
ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, ‘প্রথমেই মৌমিতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মশা নিধন কর্মসূচি ও মেডিকেল সেন্টারের উন্নয়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করব। চিকিৎসকরা যেন শিক্ষার্থীদের সাথে ভালোভাবে ব্যবহার করে ও ভালো মানের চিকিৎসা দেয়, সেই ব্যবস্থা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্মারকলিপিতে যে দাবি-দাওয়াগুলো আছে সেগুলো প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে খুব শীঘ্রই বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব।’