বর্ষপূর্তিতে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে মুখরিত জাবি
২০২৪ সালের কোটা আন্দোলন চলাকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই বিকেলে গণভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা নিয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা চাকরি পাবে?’
সংবাদ সম্মেলনে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের 'রাজাকারের নাতিপুতি' বলে সম্বোধনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রীর সেই বক্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দেশের সব পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা।
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের ফলে দিন রাতে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন নতুন মোড় নেয়।
এদিন রাতেই প্রধানমন্ত্রীর সেই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ স্বরূপ এদিন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় 'তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে স্বেরাচার স্বৈরাচার', 'চেয়েছিলাম অধিকার হয়ে গেলাম রাজাকার' ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয়, যা শেখ হাসিনা সরকারে ভিত নড়বড়ে করে দিয়েছিল। এদিনেই প্রথম দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনা সরকারকে স্বৈরাচার বলে স্লোগান দেন।
এদিন রাত ১০টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে 'তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার কে বলেছে কে বলেছে স্বেরাচার' বলে স্লোগানে ফুঁসে ওঠে শিক্ষার্থীরা। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থীরা ওই স্লোগান দেওয়ায় হলের পাঁচ শিক্ষার্থীকে ডাইনিংয়ে নিয়ে মারধর করেন হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় একত্রিত একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল অবরোধ করেন। এদিন আন্দোলনের মুখে রাতেই হল প্রভোস্ট পদত্যাগে বাধ্য হন।
সেই ঐতিহাসিক দিনের বর্ষপূর্তিতে সোমবার (১৪ জুলাই) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় বটতলা এলাকা থেকে প্রতীকী মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা এসে এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার, কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার’; স্লোগানে এই কর্মসূচি পালন করেন। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে গিয়ে শেষ হয় এই কর্মসূচি।