ফের পেছাল জাকসু নির্বাচনের তারিখ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন আবারও পিছিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ও মদদদাতা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিচার কাজ পূর্বনির্ধারিত রোডম্যাপ (পথ নকশা) অনুযায়ী সম্পন্ন না হওয়ায় ফের নির্বাচনের তারিখ পেছানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে জাকসু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন শিক্ষার্থী ও অন্যান্য অংশীজন মতবিনিময় সভা শুরু হয়। দীর্ঘ দশ ঘণ্টা মিটিং শেষে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচনের নতুন সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
এ সময় শিক্ষার্থীরা জুলাই হামলায় জড়িতদের নির্ধারিত সময়ে বিচার কাজ শেষ না করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিযুক্ত করেন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিচার কার্য সম্পন্ন করার জন্য পুনরায় সময় চান। এরপর উপস্থিত সকলের সাথে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে উপাচার্য বিচার ও জাকসু নির্বাচনের নতুন রোডম্যাপ (পথ নকশা) ঘোষণা করেন।
ঘোষিত নতুন রোডম্যাপ (পথ নকশা) অনুযায়ী, আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের সাময়িক বহিষ্কৃতদের চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত হবে। ৩১ আগস্ট হামলায় বিভিন্নভাবে জড়িত শিক্ষকদের চূড়ান্ত বিচার সম্পন্ন করা হবে এবং সম্ভাব্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এছাড়াও পূর্ব ঘোষিত নির্বাচনী তফসিল বাতিল হওয়ায় আগামী ২০ আগস্ট নতুন করে আবার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হবে জানানো হয়।
জাকসু নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ছাত্র শিবির জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ প্রশাসন জাকসু নিয়ে শুরু থেকে তালবাহানা করে আসছে। আমরা শেষ বারের মতো এই প্রশাসনকে সুযোগ দিচ্ছি। নতুন ঘোষিত তারিখের মধ্যে এই প্রশাসন যদি জুলাই হামলায় জড়িতদের বিচার নিশ্চিত ও জাকসু নির্বাচন করতে না পারে তাহলে আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’
এ বিষয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বার বার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হামলাকারীদের বিচার আর জাকসু নির্বাচন মুখোমুখি করার চেষ্টা করেছে। এর আগেও একই ইস্যুতে কয়েক দফা জাকসু নির্বাচন পেছানো হয়েছে, আবারও পেছাল। তবুও শেষবারের মতো গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এ প্রশাসনের ওপর আমরা আরেকবার আস্থা রাখতে চাই। আমরা মনে করি, এ প্রশাসন বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মদদপুষ্ট প্রশাসনের মতো শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।’
জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, আমরা মনে করেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পূর্বঘোষিত তফসিল অনুযায়ী জাকসু নির্বাচনের আয়োজন করবে। বার বার জাকসু পিছানো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুুতির ঘাটতি হিসেবে দেখছি। আমরা আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই আগস্ট আন্দোলনে হামলাকারী ছাত্রলীগ এবং এদের দোসরদের বিচার নিশ্চিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করবে।