১৮ মে ২০২৫, ১৩:৩৭

সাম্য হত্যা : এবার ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম সাদা দলের

সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন  © টিডিসি ফটো

সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এ সময়ের মধ্যে প্রকৃত খুনিকে বের করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। এর আগে গত শুক্রবার ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৮ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

শিক্ষকরা বলেন, সাম্য হত্যা পরিকল্পিত। একটা চক্র নিছক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এখানে প্রশাসনের দু-একজনের বিষয়টিকে অন্য দিকে ডাইভার্ট করতে চাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তারা।

সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। সাম্য মারা যায়নি। সাম্য হত্যার আজ পাঁচ দিন পূর্ণ হলো। আমরা ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিচ্ছি যদি সাম্য হত্যার প্রকৃত খুনিদের বাহির করা না হয় আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাব। আমরা কারও ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করাব না। সাম্য হত্যার মোটিভকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করতে চাচ্ছে একটা গ্রুপ। এটা না ওটা, ওটা না এটা। আগে সাম্য হত্যার বিচার হবে। আগে এরেস্ট করা হবে। তারপর আমরা অন্য আলাপ করব।

তিনি আরও বলেন, এখানে প্রশাসনের দু-একজনের মধ্যে আমি দেখতেছি অন্য দিকে ডাইভার্ট করতে চাচ্ছে। এই মটিভটা (সাম্য হত্যার বিচার) চেঞ্জ করা যাবে না। আগে সাম্য হত্যার বিচার হবে। বিগত দুমাস আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তারও কোনো বিচার হয়নি। সংস্কারের বুলি আওড়াচ্ছে সরকার কিন্তু কোনো অগ্রগতি আমরা দেখছি না। শুধু গুম, খুন, শেয়ার বাজারের ধস এবং আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে নিরাপদ করতে হবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তার মিছিল-মিটিংয়ের পার্কিং লট হিসেবে ঢাবিকে ব্যবহার করত। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ব্যবস্থাপনা ঢাবির কাছে হস্তান্তর করতে হবে। কারণ এখানে নানা ধরনের অপকর্ম হয়। এর দায় তো ঢাবি নেবে না। তাই এটাকে ঢাবির আন্ডারে আনা হোক।

সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থির করার জন্য পরিকল্পিতভাবে সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। যত দিন পর্যন্ত বিচার না হবে ক্যাম্পাস নিরাপদ হবে না।

সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, এই শিক্ষাঙ্গনে আমরা লাশের রাজনীতি দেখতে চাই না। আমরা চাই শিক্ষার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ। পতিত শক্তির সমর্থকরা এখনো ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে। আমরা শুনতে পারছি যে ডাকসু নির্বাচন করার জন্য ইতোমধ্যে আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু আবারও বলছি ডাকসু নির্বাচন করার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিষদের সভা ডেকে ক্যাম্পাসকে আগে সন্ত্রাসমুক্ত করুন।

তিনি বলেন, একপক্ষ ক্যাম্পাসে কথা বলবে, আরেক পক্ষ ক্যাম্পাসে কথা বলতে পারবে না। তাদের ক্যাম্পাসে তাদের ওপরে আঘাত আসবে, এই ক্যাম্পাসে ডাকসু নির্বাচন হওয়া আমাদের জন্য কাম্য না। তবে আমরা অবশ্যই দ্রুত ডাকসু নির্বাচন চাই। সেই অনতিবিলম্বে নির্বাচন করার আগেই সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে।