চবিতে ধর্ষণবিরোধী সমাবেশে ভিন্ন ইস্যুু, তোপের মুখে ছাত্রী

সারাদেশে সাম্প্রতিক নারী সহিংসতা ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সমাবেশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীরা। ধর্ষণবিরোধী সমাবেশে প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করায় তোপের মুখে পড়েন এক ছাত্রী। রবিবার (৯ মার্চ) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পয়েন্টে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এই ঘটনা ঘটে।
সাম্প্রতিক ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ১০ শিক্ষার্থীর মধ্যে বহিষ্কারাদেশপ্রাপ্ত সুমাইয়া শিকদারের বক্তব্য ঘিরেই এই হট্টগোল শুরু হয়।
জানা যায়, তিনি বক্তব্য দেওয়ার একপর্যায়ে চবি প্রক্টরের সমালোচনা করে তার পদত্যাগের দাবি করেন। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু শিক্ষার্থী ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়া শুরু করলে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহবায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি তার হাত থেকে মাইক নিয়ে নেন। এরপর রাফি কয়েকবার স্লোগান দিলেও কিছু শিক্ষার্থী ‘ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে রাফি সমাবেশ শেষ ঘোষণা করলে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
সারাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের প্রতিবাদে ‘শিক্ষার্থীবৃন্দ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাকা দেয়। এছাড়া, ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিচার এবং ধর্ষণের শাস্তি ফাঁসির দাবিতে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে চবির মেয়েরা’ ব্যানারে মশাল মিছিলের আয়োজন করে। পৃথকভাবে মিছিল শুরু হলেও উভয় ব্যানারের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে জিরো পয়েন্টে সমাবেশ করেন। সেখানেই এই ঘটনা ঘটে।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সমাবেশের সমন্বয়ক সাব্বির হোসেন রিয়াদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মিছিল চলাকালে আমাদের মাইক নষ্ট হয়ে যায়। এরপর জিরো পয়েন্টে এসে সমাবেশ চলাকালে সুমাইয়া শিকদার তার সঙ্গে থাকা একটি হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করে নিজেই সঞ্চালনার দায়িত্ব নেন এবং বেশ কয়েকজনের নাম ঘোষণা করে বক্তব্য দেওয়ান। কিন্তু মূল বিষয়বস্তু ধর্ষণের প্রতিবাদ না হয়ে, তারা দুপুরের কর্মসূচি নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন—যেখানে প্রধানত প্রক্টরের পদত্যাগ ও বহিষ্কারাদেশ বাতিলের দাবি উঠে আসে।’
সমাবেশে অংশ নেওয়া এক ছাত্রী বলেন, ‘আমরা গিয়েছিলাম ধর্ষকের বিচার চাইতে, ব্যক্তিগত আলাপ শোনার জন্য নয়। তারা দাবি করছেন, "ভুয়া" স্লোগান পরিকল্পিত ছিল, কিন্তু এটা সত্য নয়।’
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ধ্রুব বড়ুয়া ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সুমাইয়া যখন চবি প্রক্টরের "হানি ট্র্যাপ" নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছিলেন, তখনই একটি গোষ্ঠী এক পাশ থেকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে চিৎকার শুরু করে। এতে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং সুমাইয়ার হাত থেকে মাইক কেড়ে নেওয়া হয়। ‘হানি ট্র্যাপ’ প্রসঙ্গটি রাজনৈতিক বলে উল্লেখ করে তা প্রকাশে বাধা দেওয়া হয়। এরকম ঘটনা ছাত্রলীগের আমলেও দেখেছি। সাস্টের ভিসিবিরোধী আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে দেয়ালে লিখতে গেলে আমাদের বলা হয়েছিল, ‘রাজনীতি করতেছো’ এই অজুহাতে বাধা দেওয়া হয়, হুমকিও দেওয়া হয়। প্রতিবাদ দমিয়ে রাখার জন্য এই কৌশল বহুবার ব্যবহার করা হয়েছে।’