‘ফ্যাসিস্ট ডিন’দের অপসারণের দাবিতে রাবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এসএম একরামুল্লাহসহ সব ‘ফ্যাসিস্ট ডিন’দের অপসারণের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই স্মারকলিপি দেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী এসএম রিজন।
উপাচার্য ছাড়াও উপ-উপাচার্যদ্বয় ও প্রক্টরের কাছেও স্মারকলিপির অনুলিপি দিয়েছেন তিনি। স্মারকলিপিতে এসএম রিজন লিখেছেন, অধ্যাপক ফ্যাসিস্ট একরামুল্লাহ আমার বিভাগের ‘পলিটিক্যাল থটস’ কোর্সের একজন গেস্ট টিচার। দার্শনিক হবস এর একটি নীতি, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনে রাষ্ট্রের নাগরিককে খুন করতে হবে।’ এমন উক্তি কোট করায় আমি এবং আমার সহপাঠী ফ্যাসিস্ট এবং খুনি হাসিনাকে উল্লেখ করি। উল্লেখ্য এ সময় তিনি চুপ ছিলেন। পরবর্তীতে ভিন্ন কথা প্রসঙ্গে ফ্যাসিস্ট একরামুল্লাহ জানান, ‘তোমরা যেভাবে শেখ হাসিনাকে মার্কিং করেছো, আমিও ঠিক একইভাবে তোমাদেরকে পরীক্ষার খাতায় মার্কিং করব।’
তিনি আরও লিখেছেন, এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন তিনি ডিবিসি চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন এবং আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের কাছে বিচার দাবি করেন।
বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রীকে উৎখাত করা হলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাসিস্ট ডিনদের অপসারণ এখনো করা হয়নি। যা সত্যিই আমাদের অবাক করে। ৩৬ জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বিপ্লব পরিপন্থী এ সকল ডিনকে মেনে নেওয়া শিক্ষার্থীদের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই দ্রুত এ সকল ফ্যাসিস্ট ডিনদের অপসারণ দাবি করছি।
স্মারকলিপি প্রদানকালে এস এম রিজন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাবির অন্যতম সমন্বয়ক মেহেদী সজীব-সহ ছয়জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
তবে পরীক্ষার খাতায় নম্বর কম দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত অধ্যাপক এসএম একরামুল্লাহ।
নম্বর কম দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ও অপসারণ দাবির ব্যাপারে অধ্যাপক এসএম একরামুল্লাহ বলেন, ‘ছাত্ররা শেখ হাসিনা সম্পর্কে মন্তব্য করলেও আমি চুপ ছিলাম। আর খাতায় মার্কিং করার ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করিনি। আমার জানা মতে আমার সারাজীবনে এক টাকার অন্যায় করিনি কোথাও। শিক্ষার্থীরা অপসারণ দাবি করলে, দাবি যদি যৌক্তিক হয়, অপসারণ করবে। আমি যদি কোনো অন্যায় করি, তাহলে অপসারণ করবে। অন্যায় না করলে অপসারণ করবে কেন? এটা তো একটা নির্বাচিত পদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ভোট দিয়েই তো সবাইকে ডিন বানিয়েছে।’
এ বিষয়ে রাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘এখানে যেহেতু ঘটনাটা একটা বিভাগের ক্লাস চলাকালীন, সেহেতু শিক্ষার্থীরা ওই বিভাগের সভাপতির কাছে অভিযোগ জানালে ভালো হতো। প্রয়োজনে সভাপতি পরে আমাদের জানাতে পারতেন। যাহোক, বিষয়টা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্যই খতিয়ে দেখবে।