রাবির আইন বিভাগে সন্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগে সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবি জানিয়ে দেয়াললিখন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কোর্সগুলোর নামে মূলত সার্টিফিকেট ব্যবসা করা হয়। তাদের পড়ালেখার মান নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তাদের নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া হলেও নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হয়। বৈষম্যহীন নতুন দেশে এখনই উপযুক্ত সময় এটি বন্ধ করার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবিতে দেয়াল লিখনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা লিখেছেন। এর মধ্যে ‘সান্ধ্য কোর্স বন্ধ হোক’, ‘সার্টিফিকেট ব্যবসা বন্ধ কর’, ‘বাণিজ্যিক শিক্ষা বন্ধ কর’, ‘নিশি রাতের ব্যবসা বন্ধ কর’, ‘নো মোর সান্ধ্য কোর্স’, ‘বৈষম্য দূর হোক’, ‘এলএলএম ব্যবসা বন্ধ হোক’, ‘ডিগ্রি দোকান বন্ধ হোক’ প্রভৃতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ সারা বাংলাদেশ একটা প্রসিদ্ধ আইন প্রতিষ্ঠান। সন্ধ্যাকালীন কোর্সে নিয়ে বিভাগে মানহীন এক সার্টিফিকেট ব্যবসা চালু করা হয়েছে। আমরা এর বিপক্ষে। আমাদের বিভাগের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট দিতে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় নিয়ে বছরের পর বছর সেশনজট থাকে। অনার্সের রেজাল্ট দিতে দেরি হওয়ায় অনেকে ২-৩ বার বিজেএস পরীক্ষা দিতে পারে না। কিন্তুু সন্ধ্যাকালীন কোর্সের রেজাল্ট ঠিক সময়ে দিয়ে আবার ঠিক সময়ে পরবর্তী বছরগুলোতে ভর্তি নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আইন বিভাগের এ সন্ধ্যাকালীন কোর্সের মাধ্যমে মানসম্মত ডিগ্রিও দিতে পারছে না আবার নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সাথে ইনজাস্টিস করা হচ্ছে। আমাদের আমাদের বিভাগের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চাই। বিভাগের গুণগত মান উন্নয়নের প্রশ্নে আমরা আপোষহীন থাকব। সন্ধ্যাকালীন কোর্সের নামে সার্টিফিকেট ব্যাবসা টোটালি বন্ধ করতে হবে।
বিভাগটির আরেক শিক্ষার্থী ফাহির আমিন বলেন, সন্ধ্যাকালীন কোর্স বাতিল করতে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে আসছেন। ২০১৪ সালে এটি বাতিলের আন্দোলনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ও পুলিশের হামলার অন্তত শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। শিক্ষার্থীরা সান্ধ্যকোর্স বাতিলের যৌক্তিকতা তুলে ধরার পরও এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এটি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এখন উপযুক্ত সময় আসছে সন্ধ্যাকালীন কোর্সের নামে সার্টিফিকেট ব্যবসার দোকান বন্ধ করার। না-হলে অদূর ভবিষ্যতে নিয়মিত শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত মূল্যায়ন পাবে না এবং মেধা দিয়ে গড়ে উঠবে না।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাঈদা আঞ্জু জানান, আজ সকালে বিভাগে এসে বিষয়টি অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে ছাত্রদের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টা নিয়ে আগামীকাল মিটিং করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, গতকাল সোশ্যাল মিডিয়াতে আমি এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। তবে বিভাগ বা কোনো শিক্ষার্থী অফিসিয়ালি কোনো অভিযোগ দেননি।