প্রথম বর্ষের সব শিক্ষার্থীদের বছরব্যাপী বৃত্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ঢাবির
স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে শতভাগ শিক্ষার্থীকে বৃত্তির আওতায় আনতে প্রকল্প হাতে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, গবেষণা ও এক্সাট্রাকারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজ বাড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সিন্ডিকেটে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হওয়ার পর প্রকল্পটিতে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী আনুষঙ্গিক কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা পুরো প্রথম বর্ষ (বছরব্যাপী) এ বৃত্তির আওতায় থাকবেন বলে জানা গেছে।
‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ।
তিনি জানান, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর ছয়/সাড়ে ছয় হাজার ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়। এসব ছাত্র-ছাত্রীর যদি একটু ডেমোগ্রাফিক ডেটা দেখি তাহলে দেখা যাবে অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী আসে মফস্বল থেকে। এদের অনেকেই ঢাকা শহরে যখন আসে, প্রথম বারের মতোই ঢাকায় আসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য। দেখা যায় ছাত্র-ছাত্রীরা দুটো জিনিস নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। একটা হলো তারা মেধাবী, আরেকটা হলো তাদের স্বপ্ন। স্বপ্ন এবং মেধার উপর ভিত্তি করে শুধু মাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর আরো জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একটা অংশ থাকে যাদের অধিকাংশের মধ্যেই একটা নতুন শহরে এসে বসবাস করার জন্য, শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক সংগতি যা থাকার প্রয়োজন, তা অনেকের মধ্যে থাকে না। এই অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন তাকে হলে, হোস্টেলে থাকার জায়গা করে দেওয়ার যথাযথ ব্যবস্থা করতে পারি না। যার ফলে একদিকে শহরটা তার জন্য নতুন, ১৭ কিংবা ১৮ বছর বয়সে সে আসে, একটা নতুন শহরে আসছে, স্বপ্ন নিয়ে সে পড়তে আসছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হলের একটা সিট অথবা আর্থিক সহযোগিতা, মানসিক সহযোগিতা, সার্বিক সহযোগিতা ছাত্র-ছাত্রীরা যতটুকু প্রত্যাশা করে সে ততটুকু পায় না। যার ফলে সে একটা ভালনারেবল পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যায়। এই অবস্থার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মাঝে যত সংকট তৈরি হয়, সমস্যা তৈরি হয় তার মূল কারণ হলো ভালনারেবল পরিস্থিতি।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মামুন আরো জানান, এ পরিস্থিতি উত্তরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটা প্রকল্প হাতে নেয়ার কথা ভাবছি, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের শতভাগ বৃত্তির আওতায় আনবো। আমরা এটা এ কারণে করতে চাই যাতে করে সবচাইতে সংবেদনশীল সময় প্রথম বর্ষ, এ সময়টাতে ছাত্র-ছাত্রীদের শুধু আর্থিক দুশ্চিন্তার মাঝে না রেখে শুধুমাত্র পড়াশোনা এবং অ্যাকাডেমিক, কো-কারিকুলার এবং এক্সট্রাকারিকুলার এক্টিভিটিসের মধ্যে দিয়ে যেন ছাত্র-ছাত্রীদের আমরা জড়িয়ে রাখতে পারি, সংযুক্ত করে ফেলতে পারি, সেজন্য আমরা প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শতভাগ বৃত্তির একটা প্রকল্প হাতে নিচ্ছি। সিন্ডিকেটে ইতোমধ্যে আমাদের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে প্রাথমিক সিদ্ধান্তের আলোকে অন্য কাজগুলো আমরা এগিয়ে নিচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি যতদ্রুত সম্ভব এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে।