ঢাবিতে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে ফের ব্যর্থ প্রশাসন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ও শামসুন্নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে গত ৮ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে উচ্চস্বরে স্পিকার, মাইক ও গাড়ির হর্ন বাজানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে সন্ধ্যা ৬টার পর টিএসসি, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, হল ও আবাসিক এলাকায় স্পিকার বা মাইক ব্যবহার করে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে জানানো হয়।
তবে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন টিএসসিতে উচ্চশব্দে গানের আসর আয়োজন করে। অনুষ্ঠানটি বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন এই অনুষ্ঠানে বাধা দিতে পারেনি এমনকি কোন ধরনের শাস্তি মূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারেনি।
এরই মধ্যে রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে পায়রা চত্বরে ‘রক্তে রাঙা বিজয় আমার ২০২৪' শীর্ষক কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় রাত সোয়া ১২ টা পর্যন্ত উচ্চস্বরে গান-বাজনা চলছিল। নিয়মিত আতশবাজি ফোটানো হচ্ছিল। যদিও এখানে শিক্ষার্থীদের চেয়ে বহিরাগত লোকজনকেই বেশি দেখা গেছে।
বিধি নিষেধ থাকা সত্ত্বেও কিভাবে তারা সন্ধ্যা ছয়টার পর উচ্চস্বরে কনসার্ট আয়োজন করতে পারছেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আয়োজক গোষ্ঠীর একজন নিজেকে ব্যান্ড সোসাইটির গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পাদক পরিচয় দিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদেরকে টিএসের ভিতর আয়োজন করতে বলেছে। আমরা বলেছি যে এটা বিজয় উৎসব, সবার উৎসব। এটা বাইরে হবে। বারবার প্রক্টোরিয়াল টিম আসছে। আমাদেরকে সতর্ক করছে। টিএসসির এই সংগঠনগুলো তো সবার। আমরা কাউকে দেখছি না যে আমাদেরকে বাঁধা দিবে। আমরা যতক্ষণ খুশি ততক্ষণ অনুষ্ঠান চালাব।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠানটা মূলত ফিল্ম সোসাইটি এবং ট্যুরিস্ট সোসাইটি আয়োজন করেছে। কনসার্টে আমরা ব্যান্ডের দিকটা সামলাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ খান বলেন, দুনিয়ার সকল সংগঠন হোক, আমার কোন অনুমোদন নেই। আমি ১৭ তারিখে এদের নিবন্ধন বাতিল করব। এদের সকল অফিসে আমি তালা দিব। তিনি বলেন আমি এখনই ওদের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিব। যদিও তা করতে দেখা যায়নি।
এর আগে, গত ৭ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে উচ্চশব্দে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে প্রতিবাদ করছেন তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় সাউন্ডবক্সে বিভিন্ন ধরনের গান বাজতে শোনা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির দুটি ছাত্রী হলের ৪ হাজারের মতো শিক্ষার্থীকে। ক্যাম্পাসের এমন শব্দ দূষণ রোধে অভিনব প্রতিবাদ করেছেন তারা। এরপর ৮ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে উচ্চস্বরে স্পিকার, মাইক ও গাড়ির হর্ন বাজানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।