জাবির হলে কক্ষটিতে একাই ছিলেন তাকিয়া, অন্যরা ঝুলতে দেখে লাশ নামান
নিয়মিত হলে থাকতেন না জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথমবর্ষের (৫৩ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী তাকিয়া তাসনিম। তার কক্ষের বাকি সদস্যরাও হলে নিয়মিত থাকতেন না। হলে ফিরে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে তিনি কক্ষে একাই ছিলেন। পরদিন মিলল তাঁর ঝুলন্ত লাশ।
সহপাঠীসহ বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলের ছাত্রীরা ধারণা করছেন, প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে তাকিয়া আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ তারর কক্ষ থেকে ডায়েরি, ল্যাপটপ এবং একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উম্মে মারিয়াম বলেন, ‘রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ভোর ৫টায় খবর পাই ৭০০৫ নম্বর রুমে একজন ঝুলে আছে। সেখানে গিয়ে দেখি, তাকিয়া ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নিয়েছে। এরপর একটি বটি দিয়ে ওড়না কেটে তাকে খাটে শুইয়ে দিই। তখন গলায় হাত দিয়ে দেখি তার গলা ঠান্ডা আবার হালকা গরমও ছিল। গলায় তেমন দাগ ছিল না। তার পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল।’
নিহত তাকিয়ার স্থানীয় অভিভাবক মামা মনির হোসেন বলেন, ‘ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আমার ফোনে হল থেকে একটা কল আসে। এরপর আমাকে বলা হয়, তাকিয়া আত্মহত্যা করেছে। পরে আমি সাভার থেকে ঘটনাস্থলে যাই এবং দেখি যে, তাকে ওড়না কেটে খাটের ওপর নামানো হয়েছে। এর আগে আমি তাকিয়ার বাবাকে ফোন করে ঘটনা জানাই।’ তার বাবা-মা মাগুরা থেকে রওনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশের ডিউটি অফিসার মাসুদ বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে নিহত শিক্ষার্থীর তথ্য নিয়েছি। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষী ও তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। নিহতের পরিবার এবং হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে তার ময়নাতদন্ত করা হবে। তারা অনুমতি না দিলে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
আরো পড়ুন: ঢাবি শিক্ষক সমিতির কার্যালয় ভাঙচুর, সভাপতির দাবি— ৫৩ বছরের ইতিহাসে এরকম ঘটনা ঘটেনি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বীরপ্রতীক তারামন বিবি হল থেকে তাকিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ভোর পৌনে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ৭ম তলার ৭০০৫ নম্বর কক্ষে তার লাশ পাওয়া যায়। এ সময় এক তরুণের সঙ্গে ভিডিও কলে ছিলেন তিনি। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা প্রত্যক্ষদর্শীদের।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, প্রেমিকের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে তাকে ভিডিও কলে রেখেই তিনি এ মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নেন। তৎক্ষণাৎ তাকিয়ার প্রেমিকা (সাব্বির) মেয়েটির বান্ধবীদের ফোন করে দ্রুত রুমে গিয়ে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করতে বলেন। তবে তারা সময়মতো দরজা ভাঙতে ব্যর্থ হন।
দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তাকিয়াকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে জানান বান্ধবীরা। দ্রুত তৎক্ষণাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসককে হলে নিয়ে আসেন। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানা গেছে।