‘ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে’
‘ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে। এ অঞ্চলের চ্যালেঞ্জ ও গুরুত্ব উপলব্ধি ছাড়া শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অঙ্গনে পিছিয়ে পড়বে, যা সেমিনারের তাৎপর্য বাড়িয়ে তুলেছে।’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. শরিফুল ইসলাম এক সেমিনারে এসব কথা বলেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আয়োজনে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক এবং বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব’ বিষয়ক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারসাম্য রক্ষায় ভারত, জাপান ও রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সমন্বয় ও সতর্কতা নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ভারতের পন্ডিচেরী বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি স্কলার তাবাসসুম ইকবাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষকরা।
বিভাগটির শিক্ষার্থী ইসতিয়াক রওনকের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্যে ড. শরিফুল বলেন, ‘ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক দিক থেকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও নিয়মভিত্তিক সমুদ্রব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং ব্লু-ইকোনোমির সম্ভাবনা কাজে লাগানো জরুরি। বিশ্ববাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ এ অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা বাংলাদেশের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নৌশিন ইসলাম বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কৌশলগতভাবে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা সেমিনারের আলোচনায় বুঝতে পেরেছি। এটি আমাকে বিষয়টি নিয়ে আরও অনুসন্ধিৎসু হতে উৎসাহিত করেছে।’
আরো পড়ুন: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ১০০ জনে ১১ জন কোটায় ভর্তি
পন্ডিচেরী বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি স্কলার তাবাসসুম ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হলে কার্যকর সামুদ্রিক নীতি এবং পররাষ্ট্রনীতিতে মনোযোগ দিতে হবে। বঙ্গোপসাগরের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং সফট পাওয়ার কূটনীতি, বিশেষত পর্যটনের ওপর জোর দেওয়ার মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্ব অর্থনীতি ও কৌশলগত দিক থেকে ক্রমবর্ধমান। বাংলাদেশে বিআরআই-এর উপস্থিতি সংযোগ উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। তবে ভারসাম্য বজায় রাখতে ভারত, জাপান এবং রাশিয়ার মতো শক্তিগুলোর সঙ্গে সমন্বয় প্রয়োজন। অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ আরও জোরদার করতে সহায়ক।’
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে অতিথি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক এবং বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব হয়। এতে প্রায় দু’শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।