০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:২৭

ভারতে বাংলাদেশী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মশাল মিছিল  © টিডিসি ফটো

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুদের হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মশাল মিছিল করা হয়েছে।

আজ সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাত ৮ টায় এমন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। 

এসময় তারা দিল্লি না ঢাকা- ঢাকা  ঢাকা, দিল্লির আগ্রাসন- ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও, দূতাবাসে হামলা কেন- দিল্লি তুই জবাব দে, তুমি কে আমি কে- বাংলাদেশ বাংলাদেশ, ক্ষমতা না জনতা-জনতা জনতা, দালালি না রাজপথ-রাজপথ রাজপথ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।

মশাল মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, হল পাড়া, মুহসিন হল, ভিসি চত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। এখানেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, এই উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার বিশ্বের ইতিহাসে আজকে একটি নগ্ন ঘটনার জন্ম দিল। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কোন দেশের জনগণ অন্য কোন দেশের দূতাবাসে আক্রমণ, হামলা তো দূরের কথা, অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারে না। আজকে এই বিজেপির উগ্র বিজেপি সরকারের নেতাকর্মীরা, ইসকনের এই উগ্র সন্ত্রাসীরা, জঙ্গিরা, আরএসএস-এর সন্ত্রাসীরা দূতাবাসে হামলা করে প্রমাণ করে দিল যে তারা সভ্য জাতি কিনা, তারা বিশ্বের যে একটি সভ্যতা যে ভদ্রতা  সেটি ধারণ করে কিনা।

তিনি ভারতের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, আজকে ভারতে যে ঘটনা ঘটেছে এটি কি আপনাদের সভ্যতা ভদ্রতার পরিচয় প্রকাশ করে কিনা। যদি আপনারা সমর্থন করেন তাহলে বাংলাদেশের মানুষও সমুচিত জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় যারা গুলি করেছে তাদের অনেকেই হিন্দিতে কথা বলেছে। বিশেষ ইউনিফর্মধারীদেরকে সীমান্ত দিয়ে পার করে দেয়া হচ্ছে। তারা বিজেপি সরকারের এজেন্ট। তাদেরকে পাঠানো হয়েছিল তাদের দাসী কাজের মেয়ে এই শেখ হাসিনাকে এবং তার অনুসারীদেরকে রক্ষা করতে। 

তিনি আরও বলেন, সাইফুল হত্যার পর পরই ভারতের পক্ষ থেকে নিন্দা জানানোর সাথে সাথে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানানো উচিত ছিল কিন্তু তারা তা জানায় নাই। বরং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময়কে যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে উদ্বেগ জানিয়েছে। ভারতের অনেক বিজেপি নেতারা উল্টো হুমকি দিচ্ছে। তারা ভিসা বন্ধ করে দিবে, চিকিৎসা বন্ধ করে দেবে, আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দিবে, বাংলাদেশের মানুষ যদি না খেয়েও মরে যায় আমরা দেশকে আপনাদের কাছে বিক্রি করব না। আমাদেরও জানা আছে আপনাদেরকে কিভাবে সোজা করতে হয়। আপনারা বাংলাদেশকে নিয়ে খেলবেন আমরা সেভেন সিস্টার্সকে নিয়ে খেলব। 

যেই দেশ আমাদের অভ্যন্তরের বিষয় নিয়ে হস্তক্ষেপ করে সেই দেশের সাথে কখনো বন্ধুত্ব হতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সীমান্তে পাখির মত গুলি করে মারে, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা সম্ভব না। বাংলাদেশের বুক চিরে ভারতকে ট্রানজিট সহ কত কিছু দেয়া হয়েছে কিন্তু বিনিময় তারা বাংলাদেশকে  দিয়েছে লাশ। ভারতকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই আপনারা কি মনে করেন আপনাদের পুরো জাতীয় ঐক্যবদ্ধ আছে। না। আপনাদের দিনের পর দিন নির্যাতনের কারণে তারা এখন স্বাধীনতার আন্দোলন গড়ে তুলছে। 

স্বাধীন বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ খ্রিস্টান দল মত নির্বিশেষে আমরা সবাই কিন্তু ঐক্যবদ্ধ আছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশের শান্তি বাহিনী পাঠাতে চান আমরা কি বসে বসে আঙ্গুল চুষবো? আপনারা একটা ট্যাংক নিয়ে বাংলাদেশের ভিতরে ঢুকবেন, সেভেন সিস্টার্স ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই ভারত সরকারকে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে 
এই যে তারা বিয়ে না কনভেনশন ভঙ্গ করেছে, যতটি রাষ্ট্র এই ভিয়েনা কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে তাদের প্রত্যেকটি রাষ্ট্রের কাছে, জাতিসংঘের কাছে ভারত সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে।