ক্যাম্পাসে রিকশার বেপরোয়া গতিতে প্রাণ গেল জাবি ছাত্রীর
বেপরোয়া অটোরিকশার ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক নারী শিক্ষার্থী। নিহত আফসানা করিম রাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বেগম খালেদা জিয়া হলের আবাসিক ছাত্রী ছিলেন।
আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সামনে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় এক্সিডেন্ট করলে তিনি গুরুতরভাবে আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে জাবি মেডিকেলে নিয়ে গেলে মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় আফসানা করিম রাচি রাস্তা পার হচ্ছিল। এই অবস্থাতে একটি দ্রুতগামী রিকশা তাকে ধাক্কা মারে এবং তিনি গাছের উপর আছড়ে পড়ে।
নিহত আফসানা করিম রাচির পিতার নাম মো. রেজাউল করিম। তার গ্রামের বাড়ি শেরপুর জেলায়। তবে তার পরিবার রাজধানীর গ্রীন রোডে থাকে বলে জানা গেছে।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. সাব্বির বলেন, আমরা যখন পেয়েছি তখন চোখের মনি ফিক্সড ছিল। তার হার্টবিট পাইনি, আমরা সাথে সাথে ইসিজি করি। তার বুকের উপর ভারি আঘাতের কালচে চিহ্ন ছিল।
হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার সবুজ জানান, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাকে এনাম মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তার শরীরে মেজর কোন ইনজুরি পাইনি৷ তবে তার দাঁত পুরো মাড়িসহ বের হয়ে এসেছে। সম্ভবত এ আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে।
এই ঘটনায় ক্যাম্পাসে বেপরোয়া যান চলাচল ও প্রশাসনের অবহেলাকে দুষছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যে পরিমাণ অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি রয়েছে তারা চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ অটোরিকশা চলছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ৫৩ ব্যাচে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে এই এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন। তারা জানিয়েছেন এই ঘটনায় কোনোভাবেই প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না। পরবর্তীতে ক্যাম্পাসের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, সড়ক উন্নয়ন ও সার্বিক নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ডেকেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, একজন শিক্ষার্থী যে একমাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক স্বপ্ন নিয়ে এসেছে তার এই স্বপ্নের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। এরকমভাবে কারও মৃত্যুই কাম্য নয়। আমরা শোকাহত। নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের সাথে কথা হয়েছে। হাসপাতালে আমার সহকর্মী প্রো-ভিসি (প্রশাসন) গেছেন। একইসাথে অভিযুক্ত রিকশাচালককে শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যানবাহনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ করছি।