খেলাকে কেন্দ্র করে রাবিতে সংঘর্ষ, শিক্ষক-সাংবাদিকসহ আহত ১০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগ ও মার্কেটিং বিভাগের মধ্যকার আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলায় স্লেজিংকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহফুজুর রহমান এবং দুই বিভাগের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়া দায়িত্ব পালনকালে এক সাংবাদিককে মারধর ও ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করার ঘটনা ঘটে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে এ ঘটনা ঘটে। এসয় আহতদের মেডিকেলে নেওয়া হয় এবং প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। মার্কেটিং বিভাগের সভাপতির গাড়ি ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে রাউন্ড-১৬ এ মার্কেটিং বিভাগ ও আইন বিভাগের খেলা হয়। এতে মার্কেটিং বিভাগ ১ গোলে বিজয়ী হয়৷ খেলা চলাকালে উভয় পক্ষের দর্শক স্টেডিয়ামে অবস্থান করছিলেন। গোল হওয়ার এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ একে-অপরকে ‘ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করলে বাকবিতণ্ডা বাধে। খেলা শেষে আইন বিভাগ আগে স্টেডিয়াম ত্যাগ করে। পরে মার্কেটিং বিভাগ বের হয়। কিন্তু স্টেডিয়াম গেটে ফের উভয় পক্ষের কিছু শিক্ষার্থী বাকবিতণ্ডায় জড়ায়।
এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয় এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটের আঘাতে আইন বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুর রহমান এবং ওই বিভাগের তানজিল ও তোফায়েলসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক বণিকবার্তা পত্রিকার ক্যাম্পাস সাংবাদিকের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে এবং তার ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করেন মার্কেটিং বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী। তবে আরও কেউ আহত হওয়ার কথা তৎক্ষণাৎ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাঈদা আঞ্জু বলেন, আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজে আছি। আমাদের শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।
মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নুরুজ্জামান বলেন, এই রাখো তো। তোমরা সাংবাদিক রাখো তো এইগুলা। আমি মরে যাচ্ছি আর তোমরা সাংবাদিকরা খালি ফোন দিচ্ছো। এটা বলেই তিনি কল কেটে দেন।
আহত সাংবাদিক আবু সালেহ শোয়েব বলেন, আমিসহ কয়েকজন সাংবাদিক প্রেসক্লাবের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিছিল শোডাউন নিয়ে ফার্স্ট সায়েন্স বিল্ডিং পার হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। হাতে লাঠিসোঁটা দেখে একজন সাংবাদিকের দায়িত্বের জায়গা থেকে ভিডিও করার জন্য ফোন বের করতেই ওই বিভাগের আনুমানিক ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থী আমার দিকে ধেয়ে এসে মারধর শুরু করে। আমি সাংবাদিক পরিচয়ে আইডি কার্ড দেখানোর পরও সেটি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। আমার কলার চেপে ধরে ফোন থেকে জোর করে ভিডিও ডিলিট করায়। আমার সাথে প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ কয়েকজন সাংবাদিকও আহত হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমরা ঘটনাস্থলে থেকে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছি।