জাবি চারুকলা ভবন নিয়ে জালিয়াতি, অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে ভুয়া তথ্যের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চারুকলা ভবন নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ভুয়া তথ্য দেওয়া হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অংশীদারিত্বে প্রায় ৯৬ কোটি ৯৬ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা ব্যয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরু হয় এ বছরের ২রা জুন। তবে প্রকল্পটির শুরু থেকেই নানা বিতর্কের জন্ম হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের অধীন 'জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি বিল্ডিং স্থাপন' শীর্ষক প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। এ সভায় মাস্টারপ্ল্যানের নামে লে আউট প্ল্যানকে উপস্থাপন করে প্রকল্প অনুমোদন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভায় মাস্টারপ্ল্যান হিসেবে যা উপস্থাপন করা হয়েছিল, তা আসলে কোনো সংশোধিত বা রিভাইজড মাস্টারপ্ল্যান ছিল না, বরং এটি শুধুমাত্র একটি লে আউট প্ল্যান এবং ফিজিবিলিটি স্টাডি ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ জানিয়েছেন, স্থপতি মাজহারুল ইসলামের তৈরিকৃত মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকৃত মাস্টারপ্ল্যান প্রণীত হয়নি। তিনি আরও বলেন, ফিজিবিলিটি স্টাডিকে কখনো মাস্টারপ্ল্যান বলা যায় না, এটি একটি পৃথক দিক।
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে আন্দোলন করে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই পরিস্থিতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, প্রশাসন যদি লে আউট প্ল্যানকে মাস্টারপ্ল্যান হিসেবে চালিয়ে প্রকল্পটি পাস করে, তাহলে তা একটি ন্যাক্কারজনক কাজ হবে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সরকারের কাছে প্রকল্পটি পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানাচ্ছি।
এই বিষয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান- স্থপতি মাজহারুল ইসলামের মাস্টারপ্ল্যানের ভিত্তিতেই রিভাইজড প্ল্যান প্রণীত হয়েছে এবং মাস্টারপ্ল্যান যেকোনো সময় সংশোধন করা যেতে পারে।
এইছাড়াও প্রকল্প পরিচালক এম ময়েজ উদ্দিন বলেন- মাস্টারপ্ল্যান যেকোনো সময় সংশোধন করা যেতে পারে এবং সেটি এখনো প্রক্রিয়াধীন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য একনেক থেকে ২০১৮ সালে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়, তবে শুরু থেকেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রকল্পের সঠিক পরিকল্পনার জন্য আন্দোলন করে আসছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।