জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে ছাত্রশিবিরের ৪১ দফা
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আক্রমণকারীদের বিচারের ব্যবস্থা, আওয়ামী লীগ আমলের সব উপাচার্যের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ, মাদকমুক্ত ও নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি সংস্কারসহ ৪১ দফা প্রস্তাব দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির।
রোববার (৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাব পেশ করেন সংগঠনটির তিন নেতা। তারা হলেন শিবিরের সভাপতি হারুনুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান ও প্রচার সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন। সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর রাতে ৩৫ বছর পর প্রকাশ্যে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তিন নেতা। প্রতিবাদে ওই রাতেই বিক্ষোভ করে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের একটি দল।
শিবিরের উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো, গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তির স্বাস্থ্যসেবা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে; ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে অপরাধের মাত্রা ও সীমা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বহিষ্কার, সনদ বাতিল, ভর্তি বাতিল, পদ বাতিল, নিয়োগ বাতিল বা প্রাসঙ্গিক সাজা দেওয়ার পাশাপাশি মামলা করে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচারের আওতায় আনা; ১৬ জুলাইকে সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা; ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার মূল কারিগর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের অপ্রাসঙ্গিক ব্যক্তিদের নামে সব স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের শহীদদের নামে নামকরণ।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে নবীনবরণের খাবার খেয়ে অসুস্থ অর্ধশতাধিক, সন্দেহে ‘বনফুল’
প্রস্তাবনার মধ্যে আরও আছে, জাকসু, হল সংসদ ও বিভাগওয়ারি শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা; সাবেক উপাচার্য ফারজানা ইসলামের আমলের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতিসহ স্বৈরাচার আমলের সব উপাচার্যের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ; ফ্যাসিবাদী আমলে ক্যাম্পাসে সংঘটিত সব ছাত্র নিপীড়ন, র্যাগিং ও নির্যাতনমূলক ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও রাষ্ট্রীয় আইনে যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা করা; বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সংঘটিত প্রতিটি খুন ও শিক্ষার্থী হত্যার পূর্ণাঙ্গ বিচারের ব্যবস্থা করা; আবাসিক হলের নিয়মতান্ত্রিক আসন বণ্টন নিশ্চিত করা; গত ১৬ বছরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের অবৈধভাবে হল দখলের ঘটনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারের আওতায় আনা ও মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা।
এ ছাড়া শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগের পদ্ধতি অবিলম্বে বাতিল; ফ্যাসিস্ট সরকারের বিগত ১৫ বছরে সব অবৈধ নিয়োগ বাতিল করার লক্ষ্যে উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন; নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপদ ক্যাম্পাস তৈরি; ছাত্রী হলগুলোয় দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকসহ অন্য কর্মকর্তাদের শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা; পোশাকের কারণে কোনো শিক্ষার্থী যেন শ্রেণিকক্ষে ও ক্যাম্পাসে শিক্ষক, সহপাঠী বা অন্যদের দ্বারা নিগৃহীত না হন, এটা নিশ্চিত করার জন্য সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা; নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যৌন নির্যাতনবিরোধী সেলের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ করে অবিলম্বে নতুন কমিটি গঠন করা।