জাবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবেশীদের যত অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শারীরিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক দেবব্রত পালের বিরুদ্ধে আবাসিক ভবনে বসবাসের 'পরিবেশ বিনষ্ট ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের' অভিযোগ করেছেন একই ভবনে বসবাসরত তার প্রতিবেশীরা। অন্যদিকে এই ঘটনায় 'অসদাচরণের' বিচার চেয়ে পাল্টা অভিযোগপত্র দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
গতকাল সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে দেবব্রত পালের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র জমা দেন অভিযোগকারী কয়েকজন শিক্ষক ও এক কর্মকর্তা। অন্যদিকে 'অসদাচরণের' বিচার চেয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর পাল্টা অভিযোগপত্র জমা দেন দেবব্রত পাল।
দেবব্রত পালের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস্ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহফুজা মোবারক, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুমতাহানা মৌ, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমাইয়া খান ও সহকারী রেজিস্ট্রার মমতাজ ইসলাম।
দেবব্রত পালের বিরুদ্ধে লেখা অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সি ৪৩-৫০' বিল্ডিংয়ের বাসিন্দা। এই বিল্ডিংয়ের 'সি ৪৬' নম্বর বাসাটিতে শারীরিক শিক্ষা অফিসের উপপরিচালক দেবব্রত পাল বসবাস করেন। অনেকদিন ধরেই তিনি এই বিল্ডিংয়ে বসবাসের পরিবেশ বিনষ্ট করছেন এবং বিল্ডিংয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন। প্রতিনিয়ত তার ফ্ল্যাট থেকে আসা বিকট চিৎকার ও শব্দ এই বিল্ডিংয়ের অন্যান্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন করছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে তার ফ্ল্যাটে নাচের অনুশীলন চলে। দ্বিতীয় তলায় তার ফ্ল্যাট হওয়ায় সেই অনুশীলনের কম্পন সারা বিল্ডিংয়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্যান্য ফ্ল্যাটও সে-কম্পনে কেঁপে ওঠে। সেই কম্পনজনিত কারণে ফ্ল্যাটের বিভিন্ন অংশ থেকে ‘একটানা ঝনঝন’ আওয়াজ হতে থাকে। এছাড়াও তার বাচ্চারা রাতের বেলায় বাসা র মধ্যে ক্রিকেট খেলে। এতে শিক্ষকদের ব্যক্তিগত পড়াশোনার মারাত্মক ক্ষতি হয়, বিভিন্ন ফ্ল্যাটের বাচ্চাদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে, কোনো কোনো ফ্ল্যাটের বৃদ্ধ ও অসুস্থ বাবা মায়ের জন্য এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য দেবব্রত পালের বাসায় আলোচনা করতে গেলে তার স্ত্রী শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দেবব্রত পাল। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন আমিও রবিবার অভিযোগপত্র দিয়েছি। আমার স্ত্রীর সাথে তারা অশোভন আচারণ করেছেন। আমার বাসা দ্বিতীয় তলায়। যারা অভিযোগ করেছে তাদের বাসা তৃতীয় চতুর্থ তলায়। সমস্যা হলে নিচ তলার মানুষের হওয়ার কথা। চার তলার কারো কীভাবে সমস্যা হয় বুঝতে পারি না। গত রবিবার তারা যে সময়ে আমার বাসায় এসেছিল তখন আমি বাসায় ছিলাম না। তারা আমার স্ত্রীর ও মেয়ের সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সঙ্গে মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।