আন্দোলন নিয়ে উসকানিমূলক পোস্ট, চবির সেই ছাত্রীর বহিষ্কার চান সহপাঠীরা
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্দোলনরতদের বিরুদ্ধে উসকানি ও বিদ্বেষমূলক পোস্ট দেয়া জান্নাতুল ফেরদাউস মুন্নি নামে সেই ছাত্রীর বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত মুন্নি বাংলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
আজ বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় মুন্নির বহিষ্কারের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। মুন্নিকে বহিষ্কার করা না হলে আমরণ অনশনের হুশিরারি উচ্চারণ করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। অবস্থান কর্মসূচি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত কমিটি বরাবর একটি লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুন্নির সহপাঠী আহসান হাবীব লিয়ন বলেন, জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মুন্নি ছাত্রলীগের দোসর হয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে মৌনসম্মতি এবং আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সোশ্যাল মিডিয়াতে হুমকি দিয়ে আন্দোলনকে ব্যাহত করতে চেষ্টা করছে। সরকার কোনোভাবে থাকতে পারতো তাহলে সেটা তার সহপাঠী যারা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল তাদেরকে ক্যাম্পাসে নানাভাবে হেনস্তা করতো।
আরও পড়ুন: আন্দোলন নিয়ে উসকানিমূলক পোস্ট চবি ছাত্রীর, পরীক্ষা বর্জন সহপাঠীদের
তিনি বলেন, আমরা চাই সে যেহেতু আন্দোলনে ফ্যাসিসস্টের দোসর হয়ে কাজ করছে সে স্বাধীন বাংলায় এখন আমাদের সাথে কোনোভাবে ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমাদের একটাই দাবি মুন্নিকে ২৪ ঘণ্টার ভেতরে বহিষ্কার করতে হবে। যদি প্রশাসন বহিষ্কার না করে আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যাব।
তার আরেক সহপাঠী দীপা মুহুরী বলেন, আন্দোলনের সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে ফ্যাসিস্টটের দোসর হয়ে মুন্নি উসকানিমূলক পোস্ট করেছে। যে ফ্যাসিস্টের দোসর হয়ে কাজ করতে পেরেছে আমরা চাই সে আমাদের সাথে পরীক্ষা এবং ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবেনা। তাকে অবশ্যই বহিষ্কার করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘সম্প্রীতি ও শৃঙ্খলা উন্নয়ন কমিটি’র আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল আমীন বলেন, এরকম একটি অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা ফ্যাক্ট চেকিংয়ের মাধ্যমে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।
এর আগে গত ২০ অক্টোবর অভিযুক্ত মুন্নি প্রথম বর্ষের সমাপনীর ১০১ নাম্বার কোর্সের পরীক্ষা দিতে আসলে সহপাঠীরা পরীক্ষা বর্জন করে বিভাগের সভাপতির কক্ষের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় আন্দোলনের বিরুদ্ধে থাকা মুন্নি পরীক্ষায় বসলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা না দেয়ার ঘোষণা দেয়। একদিন আগে শিক্ষার্থীরা প্রক্টর বরাবর গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সংগঠিত হওয়া ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন উসকানিমূলক পোস্ট করেছিলো ওই ছাত্রী। যার ফলে ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাকে সেসময় বয়কট করেছিলো। এছাড়া ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে ব্যাচের বাকিরা পরীক্ষায় বসবে না বলেও বিভাগকে অবগত করেছিলো তারা। তবে পরবর্তীতে বিভাগের শিক্ষকদের অনুরোধে ওই ছাত্রীর ক্ষমা চাওয়া সাপেক্ষে পরীক্ষায় বসতে দিতে সম্মত হয় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ওই ছাত্রী ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানালে ব্যাচের বাকি শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই তার সাথে একইসাথে পরীক্ষায় বসতে রাজি হয়নি। যার ফলে সেদিনের ১০১ নাম্বার কোর্সের পরীক্ষক স্থগিত ঘোষণা করে বিভাগ কর্তৃপক্ষ।