২০ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:২১

আন্দোলন নিয়ে উসকানিমূলক পোস্ট চবি ছাত্রীর, পরীক্ষা বর্জন সহপাঠীদের

  © টিডিসি ফটো

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যায় সমর্থন দেয়া এক সহপাঠী পরীক্ষা দিতে আসায় ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা বর্জন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের ৫৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা প্রক্টর বরাবর গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপিও প্রদান করে। 

আজ রবিবার (২০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১০টায় প্রথম বর্ষ সমাপনীর (ইয়ার ফাইনাল) ১০১ নাম্বার কোর্সের পরীক্ষা বর্জন করে বিভাগের সভাপতির কক্ষের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় আন্দোলনের বিরুদ্ধে থাকা জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি নামে ওই ছাত্রী পরীক্ষায় বসলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। বাধ্য হয়ে পরীক্ষা স্থগিত করে বিভাগ কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, সম্প্রতি সংগঠিত হওয়া ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন উসকানিমূলক পোস্ট করেছিলো ওই ছাত্রী। যার ফলে ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাকে সেসময় বয়কট করেছিলো। এছাড়া ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে ব্যাচের বাকিরা পরীক্ষায় বসবে না বলেও বিভাগকে অবগত করেছিলো তারা। তবে পরবর্তীতে বিভাগের শিক্ষকদের অনুরোধে ওই ছাত্রীর ক্ষমা চাওয়া সাপেক্ষে পরীক্ষায় বসতে দিতে সম্মত হয় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ওই ছাত্রী ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানালে ব্যাচের বাকি শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই তার সাথে একইসাথে পরীক্ষায় বসতে রাজি হয়নি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা বিভাগের ৫৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রনি হোসেন বলেন, আমরা বিভাগকে আগেই জানিয়েছিল তিনি (মুন্নি) পরীক্ষায় বসলে আমরা পরীক্ষা বর্জন করব। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা সিদ্ধান্ত নিই সে যদি ক্ষমা চাই তাহলে আমরা পরীক্ষায় বসতে দিবো। কিন্তু সে কোনোভাবেই তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে রাজি হয়নি। এমনকি তার আচরণ এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ ছিল যে শিক্ষকরা অনুরোধ করা সত্ত্বেও সে ক্ষমা চাইতে রাজি হয়নি। তাই আমরা ব্যাচের সকলের মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সে পরীক্ষায় বসলে আমরা কোনোভাবেই পরীক্ষা দেব না।

অভিযুক্ত ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি বলেন, আমি কোটা আন্দোলনে শুরু থেকে হাইকোর্টের রায় হওয়া পর্যন্ত ছিলাম। আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে আহত হয়েছি। হাইকোর্ট থেকে যখন কোটার রায় হয়, তখন আমি আন্দোলন থেকে বের হয়ে পড়ি। এরপর ফেসবুকে একটা পোস্ট করি- 'কোটার বিপক্ষে ছিলাম, কিন্তু এখন যেটা চাচ্ছেন সেটার পক্ষে নেই।' এই পোস্টের কারণেই আমাকে বিভাগ থেকে বয়কট করে। আজ আমি পরীক্ষা দিতে যাওয়ায় আমার সহপাঠীরা ক্লাস থেকে বের হয়ে যায়। আমি পরীক্ষা দিতে চাই। আমি তো কোন ক্রাইম করিনি। শিক্ষকদের কাছে আমি সবকিছু বলেছি। বিভাগ থেকে লিখিত আকারে যদি আমাকে পরীক্ষা দিতে না বলে, সেটা আমি গ্রহণ করবো এবং পরে অ্যাকশন নিবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম বলেন, পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত পরীক্ষার নতুন তারিখ এবং ওই ছাত্রীর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে আগামী মঙ্গলবার বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির মিটিং দিয়েছি। সেখানে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো।