১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৯

ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বায়োটেকনোলজির ডিজি হলেন বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নেতা

অধ্যাপক শাহেদুর রহমান  © সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক শাহেদুর রহমানকে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক (ডিজি) পদে নিয়োগ করা হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব উজ্জল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের তাকে এ নিয়োগ দেওয়া হয়।

তবে জানা গেছে, অধ্যাপক শাহেদুর রহমান এর আগে ২০২৩ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেখানে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের প্যানেল থেকে ৩৯নং ব্যালটে নির্বাচনে অংশ নেন। ফলে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক পদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ লালন করা ব্যক্তি নিয়োগ পাওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘তিনি যে আদর্শের সাথে জড়িত ছিলেন সেটা নিয়ে সন্দেহেরে কোন কারণ নেই। এটা অবাক করার মতো বিষয়। আমার প্রশ্ন থাকলো, তাহলে কী তারা সময়ে সময়ে অবস্থান পরিবর্তন করেন?’ 

ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম জানান, আমার বক্তব্য শুধু অধ্যাপক শাহেদুর রহমানকে নিয়ে নয়। তার আদর্শের বিষয়ে আমরা জানি। তিনি নিয়োগের শুরু থেকেই একটি আদর্শ লালন করতেন। দেশজুড়ে অনেক স্থানে আমরা এই প্রবণতা দেখেছি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের জাতির প্রত্যাশা এমন নয়। যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে ছিলেন, তাদের নতুন করে বিভিন্ন দায়িত্ব দেয়া হলে ১৫ বছর থেকে বঞ্চনার শিকার যারা তাদের সাথে অন্যায় করা হবে।

বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের প্যানেল থেকে ৩৯নং ব্যালটে নির্বাচনে অংশ নেন

তবে অধ্যাপক শাহেদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের সময়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে একটা নির্দিষ্ট মতাদর্শের বাইরে যাওয়ার কোন সুযোগ ছিল না। আদর্শের প্রশ্নে আমি বলব, আমার প্রথম আদর্শ আমি বাংলাদেশি। আর যোগ্যতার প্রশ্নে আমি বাংলাদেশে বায়োটেকনোলজির প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলাম। এই সেক্টরে আমার যেটুকু অবদান আছে, যে অভিজ্ঞতা রয়েছে সেটার ভিত্তিতেই আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’

ফ্যাসিজমের পক্ষে থাকা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতিতে জড়িত থাকার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও আওয়ামী সরকারের সময়ে বঞ্চনার শিকার হয়েছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও শিক্ষার্থীদের পক্ষে দাড়িয়েছিলাম। আমি ফেসবুকে তেমন লেখালেখি কিংবা প্রতিবাদ করিনা। তবে আমার বিভাগে যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে বরাবরই আমার শক্ত অবস্থান ছিল।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী সরকারের প্রতি আমার নৈতিক সমর্থন তখনই তুলে নিয়েছি, যখন শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়েছে। যারা জুলাই গণহত্যা ঘটিয়েছে তাদের সমর্থন দেয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি মনে করি এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিচার হওয়া জরুরি।’

অধ্যাপক রহমানের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তিনি ২০১১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সহকারি অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি বায়ো-রিসোর্সেস টেকনোলজি এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল বায়োটেকনোলজি ল্যাবের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এর আগে তিনি ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক হিসেবেও নিয়োজিত আছেন।