১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩০

ঢাবির ‘সি’ ইউনিটে ভালো ফলের জন্য যা করণীয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ইনসেটে আশিক রানা)  © সম্পাদিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। এইচএসসি পরীক্ষা পরবর্তী অনেক শিক্ষার্থী স্বপ্ন দেখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়ার জন্য।

ইতোমধ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন। তবে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি কীভাবে নিলে সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়া যাবে, সে সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১০১তম স্থান অধিকারী আশিক রানা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মুহাইমিনুল ইসলাম।

ভর্তি পরীক্ষায় প্রস্তুতির ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী প্রথম কোন বিষয়ের ওপর আলোকপাত করবে?

আশিক রানা: যেকোনো প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিক্ষার ক্ষেত্রে প্রথম যে বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করতে হয়, তা হলো বিগত বছরগুলোতে আসা প্রশ্ন প্যাটার্ন। মোটামুটি বিগত চার-পাঁচ বছরের প্রশ্নের বিশ্লেষণ করলেই প্রশ্ন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া সম্ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটের জন্য মার্কেটিং/ ফিন্যান্স ঐচ্ছিক প্রশ্ন বাছাইয়ের সুবিধা রয়েছে। মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু বিপণন অংশ পড়লেই হবে। তবে ফিন্যান্সের ক্ষেত্রে ‘ফিন্যান্স ব্যাংকিং ও বিমা’ সব বিষয়ের প্রতি পূর্ণ আয়ত্ত থাকা প্রয়োজন।

প্রশ্নের মান বণ্টন সম্পর্কে আপনার ধারণা কী?

আশিক রানা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটের মান বণ্টন বিগত বছরগুলোর মতোই আছে। অর্থাৎ ৬০ মার্কসের এমসিকিউ পরীক্ষা এবং ৪০ মার্কসের লিখিত পরীক্ষা হবে। বাকি ২০ মার্কস দেওয়া হবে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপরে। তবে এমসিকিউ পরীক্ষায় নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি মার্ক পেলে তবেই সেই শিক্ষার্থীর লিখিত খাতা মূল্যায়ন করা হয়। তাই ভর্তি পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশে ভালো করাটা প্রথম শর্ত। লিখিত অংশে ভালো করাটা জরুরি হয়ে ওঠে মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকার জন্য, যেহেতু ‘সি’ ইউনিটের সিট সংখ্যা সীমিত, তাই শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার প্রথম দিকের সাবজেক্টগুলো খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যায়।

একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর লক্ষ্য কেমন হওয়া প্রয়োজন?

আশিক রানা: প্রত্যেক ব্যবসায় শাখার শিক্ষার্থীর প্রথম লক্ষ্য থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ বা অন্য কোনো স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে পড়ার। এর জন্য প্রয়োজন সুশৃঙ্খল প্রস্তুতি গোছাতে নিজের দুর্বলতা চিহ্নিত করে অগ্রসর হওয়া। লক্ষ্য অর্জনে বাধাগ্রস্ত করে এমন বিষয় যত এড়িয়ে যাওয়া যায়, ততই ভালো, যেমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার ও অহেতুক আড্ডায় সময় নষ্ট না করা।

সময়ের ব্যবস্থাপনা কেমন হবে?

আশিক রানা: প্রতিদিন ধারাবাহিক ৯ থেকে ১২ ঘণ্টা পড়াশোনায় ব্যয় করা উচিত, যেটা নির্ভর করে ব্যাসিক জিনিস কার কতটা ক্লিয়ার আছে তার ওপর। এ ছাড়া চূড়ান্ত পরীক্ষায় সময়ের ব্যবহার ভালো করার জন্য বিভিন্ন কোচিংয়ে টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন।

কোন টপিকের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে?

আশিক রানা: ‘সি’ ইউনিটে এমসিকিউর ক্ষেত্রে ইংরেজিতে আলাদা ৫ মার্কস না পেলে পরবর্তী অংশ মূল্যায়নই হয় না। তাই ইংরেজিতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে ‘সি’ ইউনিটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টপিক ‘Parts of Speech, Clauses, Conditional Sentences, Form of Verb, Subject-verb Agreement, Determiner’ এবং মুখস্থ অংশে ‘Appropriate preposition, Idiom & phrases, Synonyms & Antonyms, Spellings, Analogy’ বিষয়গুলো ভালো করে দেখলেই হবে।

বাংলার জন্য ধ্বনি ও ধ্বনির পরিবর্তন, ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান, সন্ধি, সমাস, কারক, উপসর্গ, প্রত্যয়, পদ প্রকরণ, দ্বিরুক্তি শব্দ, সমার্থক ও প্রতিশব্দ, বিপরীত শব্দ, শুদ্ধ ও অশুদ্ধ, পারিভাষিক শব্দ, প্রথম পত্রের সিলেবাসে উল্লিখিত অংশগুলোর ফোকাস করলেই হবে।

হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের সব টপিক শেষ করতে হবে। ভালো পজিশনের জন্য এই সাবজেক্টগুলোয় বেশি মার্কস পেতেই হবে।

লিখিত পরীক্ষার জন্য বিগত বছরগুলোয় আসা প্রশ্ন দেখলেই ধারণা পাওয়া যায় এবং এমসিকিউর প্রস্তুতি ভালো গোছানো হলে লিখিত পরীক্ষার অনেকটা কাভার হয়ে যাবে।

একটা সিটের জন্য কত মার্কস পেতে হবে?

আশিক রানা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে হলে অ্যাডমিশন পরীক্ষার পাস মার্কসের শর্ত পূরণ করে ১২০ মার্কসের ভেতর (৭৮ থেকে ৮০) মার্কস পেলে একটা সিটের আসা করা যায়।