শিবির সন্দেহে নির্যাতন: ছাত্রলীগের হাতে তুলে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার ঢাবি অধ্যাপকের
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত ‘শিবির সন্দেহে নির্যাতন, রক্তাক্ত ছাত্রকে ফের ছাত্রলীগের হাতেই তুলে দিয়েছিলেন ঢাবি অধ্যাপক’ শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এটিএম শামসুজ্জোহা। একইসঙ্গে তিনি বিষয়টি অস্বীকারও করেছেন।
আজ রবিবার (১৩ অক্টোবর) এক প্রতিবাদলিপিতে তিনি বলেন, প্রকাশিত অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া। আমার দীর্ঘদিনের পেশাগত সুনাম ক্ষুণ্ন করা এবং আমাকে সামাজিকভাবে হয়ে প্রতিপন্ন করার জন্য একতরফাভাবে ভিত্তিহীন ও অসত্য তথ্য সরবরাহ করে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করতে একটি অশুভ চক্র কাজ করেছে বলে প্রতীয়মান হয়।
প্রতিবাদলিপিতে তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় হল থেকে নিরাপত্তা প্রহরী আমাকে ফোন দিয়ে জানায় যে, হলে শিবির সন্দেহে একজন ছাত্রকে মারধর করা হচ্ছে আপনি তাড়াতাড়ি হলে আসেন। বিষয়টি শুনে ছাত্রের জীবনের নিরাপত্তার দিক ভেবে আমি তৎক্ষণাৎ হলে যাই এবং ছাত্রটিকে উদ্ধার করে প্রাধ্যক্ষের কক্ষে নিরাপদ হেফাজতে নিয়ে তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. জিয়া রহমান স্যার ও প্রক্টর স্যারকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। এ সময় আরো শিক্ষক ও হলের কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শিবির সন্দেহে নির্যাতন, রক্তাক্ত ছাত্রকে ফের ছাত্রলীগের হাতেই তুলে দিয়েছিলেন ঢাবি অধ্যাপক
“এমতাবস্থায় তাঁরা দুজনে (প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টর) ওই শিক্ষার্থীকে শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির নিকট হস্তান্তরের পরামর্শ দেন। এ সময় প্রভোস্ট স্যার নির্দেশনা দেন যে, যদি ঐ শিক্ষার্থীকে একা হলের বাইরে যেতে দেওয়া হয় তাহলে আবারো তাঁর উপর হামলা হতে পারে। এমতাবস্থায় প্রক্টর স্যার প্রক্টরিয়াল টিম ও শাহবাগ থানাকে অবহিত করলে প্রক্টরিয়াল টিমের গাড়ি ও পুলিশ এসে উপস্থিত হয়। শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রভোস্ট ও প্রক্টর স্যারের নির্দেশনানুযায়ী মো. মনিরুল ইসলামকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে হল থেকে নিয়ে যায়।”
জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মো. মনিরুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের সাবেক এই শিক্ষার্থী সম্প্রতি ফেসবুকের এক পোস্টে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে নির্যাতিত হওয়ার কথা বর্ণনা করেন।
তিনি লেখেন, ‘আমি কোনো রাজনীতিই করি না, গরিব ঘরের সন্তান। ঘটনার সময় ছাত্রলীগ কিছুতেই সেট মানতে রাজি হয়নি। তারা মেরে রক্তাক্ত করার পর হলের তৎকালীন সিনিয়র আবাসিক শিক্ষক শামসুজ্জোহা (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এটিএম শামসুজ্জোহা) আসেন। তারপর ফের ছাত্রলীগের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তৎকালীন সিনিয়র আবাসিক শিক্ষক শামসুজ্জোহা।’
সেই পোস্টটির বিষয়ে মো. মনিরুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি পোস্টে যা উল্লেখ করেছি, সেদিন তাই ঘটেছিল। সেখানে ভিত্তিহীন ও মনগড়া কিছু লিখিনি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় তৎকালীন প্রক্টর আমার কোনো খোঁজ নেয়নি। এমনটি থানায় নিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে বলা হয়েছিল প্রক্টর আসলে তাকে ছেড়ে দিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু প্রক্টর আসেনি। আমরা ৪-৫ জন তখন থানায় ছিলাম। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।