ঢাবিতে হত্যা: গ্রেপ্তারের আগে যা বলেছিলেন ছাত্রলীগ নেতা জালাল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা জালাল মিয়া গ্রেপ্তারের আগে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। নিহত তোফাজ্জলকে আঘাতের জন্য নয়, ঘটনাস্থলে জুনিয়রকে ফেরাতে গিয়ে স্ট্যাম্প হাতে নিয়েছিলেন বলে দাবি তার।
তোফাজ্জল হত্যার অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়াসহ ৫ ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের ঠিক আগে একটি গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন অভিযুক্ত জালাল।
ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘যদি আমাকে ছবি দেখে গ্রেপ্তার করে তহেলে তো আমার কিছু বলার নেই। তারা আসুক তারা আমাদের স্যারদের সাথে কথা বলুক আমি মেরেছি কী-না তা প্রমাণ করুক। আমি স্ট্যাম্প হাতে নিয়েছি মানেই যে মেরেছি তা কিন্তু না। স্টাম্পটা হাতে নিয়েছি এটা দেখল, কিন্তু জুনিয়রকে ফেরাতে গিয়ে যে স্ট্যাম্পটা পড়ে গিয়েছিল সেটা তুলে রাখলাম সেটা কেউ দেখেনি। শুধু ধরেছি ওই টুকু ফোকাস করেছে সবাই। আমি যদি সত্যিই অপরাধ করতাম তাহলে তো গণমাধ্যমের সামনে আসতাম না পলাতক থাকতাম’।
আরও পড়ুন: বাবা, মা ও ভাইয়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তোফাজ্জল
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল নামে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ওই ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ শাহবাগ থানায় এজাহার দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে লেখা হয়েছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাতাড়ি চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম- তোফাজ্জল বলে জানায়।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, পরবর্তীতে সে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাইয়ে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পিছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠিদ্বারা উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে সে অচেতন হয়ে পড়ে।
পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।