গণপিটুনিতে জাবি ছাত্রলীগ নেতা হত্যার তদন্তে কমিটি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লাকে মারধর করে হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের ৩৯-তম ব্যাচের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শামীম মোল্লা ক্যাম্পাসের প্রান্তিক গেইটে গণপিটুনির শিকার হন। পরবর্তীতে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শোক এবং দুঃখ প্রকাশ করে তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ জানায় যে, গতকাল আনুমানিক সন্ধ্যা ৫:৫০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেইটে শামীম মোল্লাকে কতিপয় ব্যক্তি মারধর করতে থাকে। এ খবর প্রক্টরিয়াল টিম জানতে পেরে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রাশিদুল আলমসহ প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রক্টর অফিসের একটি কক্ষে রাখেন। এ সময় আশুলিয়া থানা পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করা হয়। কিছুক্ষণ পর কতিপয় ব্যক্তি প্রক্টরিয়াল টিমকে না জানিয়ে জোরপূর্বক শামীম মোল্লাকে প্রক্টর অফিসের পাশে অবস্থিত নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রাশিদুল আলম ঘটনাটি জানতে পেরে নিরাপত্তা অফিসে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের সরিয়ে দেয় এবং নিরাপত্তা অফিসের কলাপসিবল গেইট তালাবদ্ধ করে দেয়।
আরও পড়ুন: ঢাবির হলে যেভাবে হত্যা করা হয় তোফাজ্জলকে
এতে আরও বলা হয়, ‘নিরাপত্তা অফিসের কলাপসিবল গেইট ভেঙ্গে কতিপয় ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশ করে শামীম মোল্লাকে আবারও মারধর করে। এ সময় প্রক্টরের নেতৃত্বাধীন প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাগণ নিজেরা ঢালস্বরূপ শামীম মোল্লার সামনে দাড়িয়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে নিবৃত্ত করে। রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টায় পুলিশ প্রক্টর অফিসে আসেন। পুলিশ খোঁজ-খবর নিয়ে জানান, শামীম মোল্লার নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। রাত আনুমানিক ৮টায় প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তা শাখা আবারও ঢালস্বরূপ শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা বেষ্টনি দিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ফোন করে জানান যে, শামীম মোল্লা স্থানীয় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।’
এ ঘটানার শাস্তি নিশ্চিতকরণের প্রত্যয় ব্যক্ত করে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেকোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করে। কর্তৃপক্ষ শামীম মোল্লার ওপর হামলার নিন্দা জানাচ্ছে। একইসাথে, এ হামলার যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।’