মাহফুজ আলমকে পড়তে-বুঝতে-লিখতে চান রাবি অধ্যাপক নিউটন
অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই অধ্যাপক অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমকে পড়তে-বুঝতে-লিখতে চান। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে এমনটাই জানান তিনি।
অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, জনাব মাহফুজ আলমের লেখা পত্র খুঁজছি আমি। পড়ার জন্য, বোঝার জন্য, তারপর তা নিয়ে লেখার জন্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে উনার দুই খণ্ড প্রকাশিত বই দুটি হাতে পেয়েছি। পড়ছি। উনার অন্য যে সমস্ত লেখা বা অনুবাদ বা বক্তৃতা বা অডিও-ভিডিও আপনাদের চোখে পড়েছে, অনুগ্রহ করে যদি আমাকে এখানে লিংক দেন বা নাম উল্লেখ করেন তাহলে আমি খুবই কৃতজ্ঞ থাকব।'
তিনি আরও লেখেন, 'মাহফুজ আলমকে নিয়ে অন্যদের লেখাপত্র থাকলেও আমাকে একটু জানাবেন, প্লিজ।'
ফেসবুকের এই পোস্টের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, 'জুলাই বিপ্লবে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তাদের জানার আগ্রহ তৈরি হয়েছে স্বাভাবিক ভাবে। কিছুদিন আগে খেয়াল করলাম দৈনিক সমকাল পত্রিকায় নাহিদ ইসলামের এক সাক্ষাৎকারে একটা প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন বাংলাদেশে যে জাতীয়তাবাদী ধ্যান ধারণা রয়েছে সেগুলোকে ওনার প্রাসঙ্গিক মনে হয়না আজকের যুগে। যেমন ধর্ম ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ, ভাষা ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ। জাতীয়তাবাদ জিনিসটাই পুরোনো হয়ে গেছে।'
তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে আমার মনে হয় জাতীয়তাবাদ তো একটি দেশের জনগোষ্ঠীর পরিচয়। যেমন আমরা যদি বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলি তাহলে আমাদের পরিচয় হবে বাঙালি। ধর্ম ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ বললে আমাদের পরিচয় হবে মুসলমান। জাতীয়তাবাদ যদি পুরোনো হয়ে যায় তাহলে আমাদের কি পরিচয় দাঁড়াবে? এরকমই একটি প্রশ্নে তিনি বলছিলেন যে বাংলাদেশে আমাদেরকে একটা জাতীয় চরিত্র গড়ে তুলতে হবে সব মানুষের সব উপাদান নিয়ে। আমাদেরকে একটা সভ্যতাগত পরিচয় দাড় করাতে হবে। সেখানে আমাদের ভিত্তি হবে আমাদের এই বঙ্গীয় অঞ্চলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক সব উপাদান, যা নিয়ে আমাদের সভ্যতাগত রাষ্ট্রীয় পরিচয় দাঁড়াবে।নাহিদ ইসলামের সাক্ষাৎকারের এই অংশটুকু নিয়ে আমি একটা পর্যালোচনা লিখেছিলাম৷'
তিনি বলেন, 'এরই মধ্যে মাহফুজ আলমকে ফেসবুকে ফলো করছিলাম। উনার কিছু পোস্ট, কথার দিকে মনোযোগ গেলো। বিশেষ করে জুলাই গণপরিষদ প্লাটফর্মে তার আলোচনাকে আমার মনে হয়েছে নাহিদ ইসলামের আলোচনারই পরিপূরক। তখন আমি অনুমান করলাম বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের এই কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে একই ধরনের ধ্যান ধারণা রয়েছে। এতে তাদের সম্পর্কে জানার আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো। নাহিদ ইসলাম এবং মাহফুজ আলমের পোস্ট গুলো পড়লাম। তখনই খবর পেলাম মাহফুজ আলমের একটি বইয়ের দুটি খণ্ড আছে। সেগুলো পড়া শুরু করলাম।'
তিনি আরও বলেন, এই আগ্রহের জায়গা থেকেই আমি মানুষের কাছে মাহফুজ আলমের সম্পর্কে জানতে চেয়েছি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে এবং আমি সাহায্যও পাচ্ছি।
সবশেষে তিনি বলেন তার পোস্টে নানা মতের মানুষ নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। সবার সব প্রশ্নের উত্তর হিসেবে তিনি একটি পর্যালোচনা তৈরি করবেন 'মাহফুজ আলমের দায় এবং দরদের সমাজ' নামে।