০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৪

ঢাবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ চেয়ে বিক্ষোভ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের

ঢাবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ ফের চালুর দাবিতে বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ফের চালু রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।

বিক্ষোভ মিছিল করতে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন এইচএসসি ২০২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এরপর একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেন বলে তারা জানিয়েছেন। স্মারকলিপিতে তারা বলেছেন, জাতির ক্রান্তিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব অন্যায় ও বৈষম্য দূরীকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দূরদর্শী নেতৃত্ব ও অসামান্য অবদানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করেছি।

তারা বলেন, দেশের স্বায়ত্তশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাবি ছাড়া বাকি তিনটিতেই দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার পর যখন থেকে ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়, তখন থেকে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকলেও অন্যায়ভাবে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে বাতিল করে। পার্শ্ববর্তী দেশ, ইউরোপ এবং আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাধিকবার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনেক শিক্ষার্থীর দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন জানিয়ে তারা বলেন, অনেক মেধাবী ও পরিশ্রমী শিক্ষার্থী প্রথমবার পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েও তার নার্ভাসনেস, রাস্তায় জ্যাম, শারীরিক অসুস্থতা, পারিবারিক সংকট ও নানা প্রতিকূলতার কারণে প্রথমবার আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করতে পারে না। এ অবস্থায় একজন শিক্ষার্থীকে একবার সুযোগ দেওয়া একেবারেই অযৌক্তিক। তাই তাদের দাবি পূর্বের মতো প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা চালু করতে হবে।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিনটি অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে অন্যায়ভাবে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করেছিল বলে তারা অভিযোগ করেন। সেগুলোর সমাধান তুলে ধরে তারা বলেন-

১. দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগের কারণে বিভাগ পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু আসন ফাঁকা থাকে। ফাঁকা আসন পূরণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ক্রেডিট পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে।

আরো পড়ুন: কৃষি গুচ্ছের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত ভর্তি পরীক্ষা কবে, যা জানা যাচ্ছে

২. প্রথম বছরের পরীক্ষার্থী ও দ্বিতীয় বছরের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। এর সমাধানে তারা বলছেন, দ্বিতীয়বার কোনো শিক্ষার্থী যদি তার সর্বোচ্চ মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে তার যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে কাঙ্ক্ষিত বিষয় অর্জন করে এক্ষেত্রে অসম প্রতিযোগিতার প্রশ্নই ওঠে না, বরং দুই বছর ধরে প্রস্তুতি নেওয়ার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় সুযোগ্য শিক্ষার্থীকেই পাবে।

৩. দ্বিতীয় বারের পরীক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতির সুযোগ নেয়। তাদের ভাষ্য, দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন জালিয়াতির কথা তুলে বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজ প্রশাসনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যার দায়ভার শিক্ষার্থীদের উপরে দেওয়া হয়েছে, এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

জানা গেছে, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার (সেকেন্ড টাইম) ভর্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগ বন্ধ রয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিচ্ছুরা তখনও আন্দোলন করেছিল। এছাড়া এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ২৬ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিভাবক আদালতে রিটও করেছিলেন। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অনঢ় ছিল। 

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রতিবারই এ বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়ে থাকে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনেও নামেন। তারই ধারাবাহিতকায় এবারও ভর্তিচ্ছুরা সেকেন্ড টাইমের সুযোগ দাবি করছেন।