০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৩

জাহাঙ্গীরনগর ও ঢাবির শিক্ষক নিয়োগের ভাইভায় যে অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছিলেন তাহমিনা

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক কাজী তাহমিনা  © সংগৃহীত

বেসরকারি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক কাজী তাহমিনা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরুর পর দু’টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষক হওয়ার জন্য ভাইভা দিয়েছিলেন তিনি। তবে সেখানে তাঁর অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর ছিল না। তাঁকে কোনওমতে ভাইভায় উপস্থিত দেখিয়ে সেরা আরও দুই প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন তিনি। 

জীবনে দুইবার পাবলিক ইউনিভার্সিটির নিয়োগ পরীক্ষা দিতে যাওয়া কাজী তাহমিনা এটিকে ‘ভাইভা ভাইভা খেলা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, আমার বিভাগে আমার ব্যাচে মাস্টার্সে আমি ফার্স্ট (সেকেন্ড ক্লাস ফার্স্ট,  লিটারেচারে কোন ফার্স্ট ক্লাস ছিল না আমাদের ব্যাচে) হয়েছিলাম। আমার যে নিয়োগ হবে না, তা জানতাম। কাদের হবে, তাও শুনেছিলাম। কিন্তু তাই বলে এতো চক্ষুলজ্জাহীনভাবে ভাইভা খেলা শেষ হবে, তা জানতাম না।

তিনি বলেন, প্রথমবার গিয়েছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগে লেকচারার পদের জন্য। তখন আমি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে কাজ করছি, সম্ভবত ২০১০ সালের ঘটনা। জাবির ভাইভায় আমাকে ইংরেজি বিভাগের তৎকালীন চেয়ার ভদ্রতা করে দু-একটি অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করে ছেড়ে দিলেন। যেমন-  ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে কী কী কোর্স পড়াই, কতদিন ধরে পড়াই। ব্যস ভাইভা শেষ! 

বোর্ডে উপস্থিত ব্যক্তিরা পুরোটা সময় ফোনে কথা বলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমাকে কোন প্রশ্ন করা দূরে থাক, আমার দিকে এতোক্ষণ তাকাননি পর্যন্ত!দু’তিন মিনিটে কী কী কোর্স পড়াই জাতীয় আবজাব প্রশ্ন করা শেষে ভদ্রতাসূচক থ্যাংক ইউ’ দিয়ে চেয়ার মহোদয় আমাকে বিদায় দিচ্ছিলেন। বোর্ড প্রধান ফোনে কথা বলা মুহুর্তের জন্য থামিয়ে আমার নাম জিজ্ঞাসা করে শুধু এটেন্ডেস দিয়ে তার ওপর অর্পিত গুরুদায়িত্ব সম্পাদন করলেন!

কাজী তাহমিনার ভাষ্য, আমি তো এক চুনোপুঁটি। আমার সাথেই ভাইভা দিতে গিয়েছিলেন জাবি ইংরেজি বিভাগেরই কিংবদন্তিতুল্য দুজন বড় ভাই। যারা দুজনই ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট এবং অসাধারণ মেধাবী। তাদেরকে যথারীতি হাস্যকর দু’একটা প্রশ্ন করে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ! 

আরো পড়ুন: ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা না জানানোর অনুরোধ ঢাবির নতুন উপ-উপাচার্য সায়েমা হকের

দ্বিতীয়বার ৭ কপি ফরম জমা দেওয়ার যজ্ঞ শেষ করে নিজের বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা দিতে গিয়েছিলেন জানিয়ে কাজী তাহমিনা বলেন, আমাকে তেমন কিছুই জিজ্ঞাসা করা হয়নি। কোনও গবেষণাপত্র আছে কীনা, কোথাও কাজ করছি কীনা- আরো দুএকটি ভদ্রতাসূচক প্রশ্ন করে শুভ বিদায় জানিয়ে দেওয়া হলো। পরবর্তীতে ওই বোর্ড থেকে যার নিয়োগ হয়েছে, শুনেছি তিনি ক্লাসে হয় রিডিং পড়েন, না হয় পাওয়ারপয়েন্ট দেখে রিড আউট করেন। প্রশ্ন করলে ক্ষেপে যান। শুনেছি, তিনি আমাদের তৎকালীন চেয়ারপারসন ম্যামের ঘনিষ্ঠ। একেবারে ‘আদর্শ টিচার্স পেট’ ছিলেন।

কাজী তাহমিনা আরো বলেন, এসব ‘নামকাওয়াস্তে  ভাইভা’ না হয়ে রিটেন, সত্যিকারের ভাইভা ও ডেমো ক্লাসের পারফর্মেন্স বিবেচনা করলে, আমার দৃঢ বিশ্বাস, আমি সুযোগ পেয়ে যেতাম।