০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:৪২

ঢাবির দুই উপ-উপাচার্য নিয়োগের প্রজ্ঞাপন দাবিতে ভিসির কাছে স্মারকলিপি

উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই উপ-উপাচার্য, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইমা হক বিদিশা এবং ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল এর নামে প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে জারি করার দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধন শেষে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। 

এ মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ২৬ আগস্ট উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান স্যারকে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু একইদিনে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইমা হক বিদিশা ম্যাডাম এবং ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল স্যারকে উপ-উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির কথা ছিল। 

তারা আরো বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট স্বৈরশাসনের অবসান ঘটেছে। হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্ত মাড়িয়ে, শত শত প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এ বিজয় বাংলাদেশের সম্ভাবনার দুয়ারকে উন্মুক্ত করেছে। গণমানুষ ফিরে পেয়েছে তাদের বাকস্বাধীনতা। 

আবারও প্রমাণিত হয়েছে- কোনো স্বৈরশাসন বাংলার ছাত্র-জনতাকে দাবিয়ে রাখতে পারে না। যে নতুন বাংলাদেশের শুভ সূচনা হলো তার ধারাবাহিকতায় বৈষম্যবিরোধী আদর্শ ও মূল্যবোধ মাথায় রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করি আমরা। একইসঙ্গে ইতোমধ্যে আমরা দলমত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক পেয়েছি আমরা। এজন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ আমরা।

দ্রুত উপ-উপাচার্য নিয়োগের প্রজ্ঞাপন না দেয়া হলে আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে তারা জানান, গত দুই মাস যাবৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এর ফলে আবারও সেশনজটের শঙ্কা আমাদের উপর ভর করছে। বিষয়টিকে সামনে রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সুপারিশে গত সপ্তাহে অন্তর্বর্তী সরকার উপাচার্যসহ দুই উপ-উপাচার্য নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিতকায় গত ২৬ আগস্ট উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান স্যারকে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু একইদিনে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইমা হক বিদিশা ম্যাডাম এবং ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল স্যারকে উপ-উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির কথা ছিল। 

আমরা গণমাধ্যমের কল্যাণে তখন জেনেছিলাম, এই দুই শিক্ষককে উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগে নীতিগত সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি ও আচার্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। তিনি সাক্ষর করেছে ফাইলেও। কিন্তু এক সপ্তাহ পার হলেও কোনো অজানা কারণে প্রজ্ঞাপন আটকে আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। আমরা জেনেছি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একটি পক্ষের বিরোধিতার কারণে এই প্রজ্ঞাপন আটকে গেছে। ইতিমধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের কাছে শিক্ষকদের একাধিক পক্ষ সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানতে পেরেছি। আমরা আশঙ্কা করছি, তারাই মূলত এই নিয়োগের বিরোধিতা করছেন। 

তবে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে বলতে চাই, রাষ্ট্রপতি মনোনীত দলমত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দুজন উপ-উপাচার্য নিয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তারা বিশ্বাসের প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ ও নটিংহামের স্কলার। এই পদে আলোচনায় থাকাদের মধ্যে যোগ্য তারাই। তাই সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে যাতে সরে না আসে। 

কথিত সুশীলদের নাম দিয়ে স্বৈরাচারের দোসরদের এই চেয়ারে বসার পাঁয়তারা বন্ধ করে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করতে  শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি আমরা। আর যদি কোনো রাজনৈতিক দল-মতের প্রভাবে যদি এই প্রজ্ঞাপন আটকে যায়, তাহলে ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না। প্রয়োজনে ফের আন্দোলনে নামবে তারা।