সাবেক মেয়র লিটনসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে রাবি অধ্যাপকের মামলা

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিকের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিকের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন  © ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুর বাড়িতে হামলা এবং ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার ক্যাম্পে ভাঙচুরের অভিযোগে সাড়ে ৫ বছর পর মামলা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষক। এতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে চন্দ্রিমা থানায় ৩৮ জনসহ অজ্ঞাত ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রাসিক মেয়রসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আলী রায়হানের ছোট ভাই রানা ইসমাইল।

নতুন করা মামলার বাদী আওরঙ্গঁজীব মো. আব্দুর রহমান। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক। তাঁর বাসা রাজশাহীর পদ্মা আবাসিক এলাকায়।

মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার (৫৫), রবিউল ইসলাম রুবেল (৪০), আকাশ (২৮), মো. সোহাগ (২৯), মো. শফিক (৫০), মো. আক্তার আহম্মেদ বাচ্চু (৫০), উজ্জল (৩৮), মো. আরিফ (৩২),  নজরুল (৫৫), আশরাফুল হাসান টনি (৩২), মো. মারফ (২৯), নিহাল (২৭), রবিন (৩২), মো. আরিফ (২৯), আশিক (২৮), আয়নাল (৫৫), মো. রফিকুল ইসলাম রফা (৪৮), মো. হিমেল (৩০), মো. পলাশ (৩৫), মো. আলামিন (৩৫), মো. সাহেব আলী (২৮), মো. সুজন (৩২), মো. আজমল হোসেন ছানা (৩০),  মো. সাইদ (২৯), মো. রাব্বি (২৯),  মো. রেজা (৪৮), মো. পাপ্পু (২৯), মো. নাহিদ (২৮), মো. ডালিম (২৭), মো. সজল (২৯), মো. রায়হান (৩০), মো. রাব্বি (২৭), মো. রিদয় (২৮), বিজয় (২৬), মো. অনি (২৮), মো. আব্দুল মোমিন (৪২) ও মো. রাজিব (৩৫)। 

এজহারে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মিজানুর রহমান মিনুর সমর্থনে চন্দ্রিমা থানার পদ্মা আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডে পোস্ট অফিসের বিপরীতে নির্বাচনী ক্যাম্পে ছিলেন। এ সময় এজাহারভুক্ত আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা বেআইনিভাবে দলবদ্ধ হয়ে হাতে লোহার রড, হকিস্টিক, ক্রিকেট স্ট্যাম্প, বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নির্বাচনী ক্যাম্পে অতর্কিত হামলা চালায় এবং ভাংচুর করে। এতে অন্তত ৪০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়, আসামিদের মারধরে বাদীসহ অনেকের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম হয়। সে সময় এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি আকাশ (২৮) এবং ১৪ নম্বর আসামি রবিন (৩২) তাদের নিকট থাকা পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ফলে আশেপাশের লোকজন ভয় পেয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। ৩ নম্বর আসামি রবিউল ইসলাম রুবেলের (৪০) নেতৃত্বে পিস্তল ঠেকিয়ে জোরপূর্বক তাঁর প্যান্টের পকেট থেকে আনুমানিক ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।

আরো পড়ুন: নীলক্ষেতে ওয়াদুদ হত্যা মামলায় আসামি শেখ হাসিনাসহ ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতারা

এ বিষয়ে বাদী আওরঙ্গঁজীব মো. আব্দুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। সেখানে আমার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী ক্যাম্পে অবস্থানকালে আমিসহ আরও অনেককেই মারধর করা হয়। পরে অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসায় আমি মামলা করতে থানায় গেলেও নেওয়া হয়নি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় মামলা করেছি। যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাই।

চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, তিনি (রাবি অধ্যাপক) যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এজন্য একটু সময় লাগবে।

এর আগে রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আলী রায়হানের (২৮) মৃত্যুর ঘটনায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সদ্য সাবেক সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনসহ এক হাজার ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারে ৫০ জনের নাম উল্লেখ আছে।


সর্বশেষ সংবাদ