১৯ আগস্ট ২০২৪, ১৬:০৪

ঢাবি অধ্যাপক জামাল উদ্দীনকে বহিষ্কারের দাবি, ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন  © সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের জামায়াত-শিবির আখ্যাসহ মামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আ ক ম জামাল উদ্দীনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে  শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার পদত্যাগ চেয়েছেন তারা।

সোমবার (১৯ আগস্ট) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বরাবর ৪ দফা সংবলিত স্মারকলিপি দেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো পূরণে সময় বেঁধে তারা। 

শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবি গুলো হলো- ১. শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য, হামলা-মামলার ভয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেয়ায় হুমকি এবং শিক্ষার্থীদের ফলাফল খারাপ করানোর হুমকি প্রদানসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত থাকায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীনকে স্থানীভাবে বহিষ্কার এবং মিড টার্ম ও ফাইনাল খাতা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে; ২. অধ্যাপক জিনাত হুদা বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায়, ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহুলকে বিনা অপরাধে গ্রেফতার এর পর তাকে জানানো হলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবং আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ১৩-১৭ ব্যাচ তার কোনো কোর্সের ক্লাস করবে না; ৩. অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও অধ্যাপক মশিউর রহমানসহ ইতিমধ্যে ব্যর্থতার দায়ে পদত্যাগকারী শিক্ষকগণ যেন বিভাগে ফিরে না আসেন তা নিশ্চিত করতে হবে; ৪. শিক্ষার্থীদের হিজাব, নেকাব, বোরখা, পাঞ্জাবি পরিধানে ও ধর্মীয় লেবাসে থাকায় আপত্তিকর মন্তব্যকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানান, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সকল দাবি মেনে নিতে হবে, অন্যথায় বিভাগ ঘেরাও সহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা। এছাড়াও দাবি না মানা পর্যন্ত বিভাগের কোন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অধ্যাপক জামাল উদ্দিন স্যার কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়াসহ মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়েছিলেন। পরীক্ষার খাতায় মার্কস নিয়েও ঝামেলা করেছেন। কোটা আন্দোলনের সাথে যুক্ত হওয়ার অভিযোগে সমাজবিজ্ঞান ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ১৪ ব্যাচের মোশারফ হোসেন ভাইয়ের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক অব্যাহতি দিয়েছেন। আমরা সমাজবিজ্ঞান শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার স্বার্থে তার পদত্যাগ চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোটা আন্দোলনে বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহুলকে বিনা অপরাধে গ্রেফতারের পর অধ্যাপক জিনাত হুদা ম্যামকে বারবার জানানো হলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং শিক্ষক সমিতির প্রোগ্রামে কোটা আন্দোলনের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আমরা ডিন ও চেয়ারম্যান অফিসে স্মারকলিপি দিয়েছি। অবিলম্বে জামাল স্যারকে বহিষ্কার ও জিনাত হুদা ম্যামকে  তার পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে, নতুবা বিভাগ ঘেরাও কর্মসূচীসহ কঠোর কর্মসূচীতে যাবে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।’