৮ মাস পরও চবি আইন বিভাগের ফল অনিশ্চিত, বিপাকে শিক্ষার্থীরা
গতবছরের ডিসেম্বরে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সব ব্যাচের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষার ৮ মাস পরেও একটি ব্যাচেরও ফলাফল দিতে সক্ষম হয়নি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আইন বিভাগ। এতে বিপাকে পড়েছেন বিভাগের চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা।
কোভিড-১৯ এর জট এক বছর ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করা নিয়েও শিক্ষকরা তৎপর না অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। বিশেষত ৪র্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা এর ভুক্তভোগী। শিক্ষকরা সময়মতো ফলাফল না দেওয়ায় এবং ফলাফল প্রস্তুতে ডিজিটালাইজেশন না হওয়ায় ফলাফল বের হতে সময় লাগে বলে দাবি শিক্ষকদের।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, আইন বিভাগের স্নাতক সকল ব্যাচের ( ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ বর্ষ) পরীক্ষাই (মৌখিকসহ) গত ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। তবে ৮মাস হয়ে গেলেও এখনো মেলেনি কোনো ব্যাচের ফলাফল। অনেক শিক্ষার্থীই ইতিমধ্যে জুডিশিয়ারির লিখিত দিবেন। তাদের উৎকণ্ঠা লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও মৌখিক পরীক্ষায় নিজের সার্টিফিকেট বা মার্কশিট দেখাতে পারবেন কিনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, এই ফলাফল প্রকাশের সমস্যা কোভিডের পর থেকে তীব্র হয়েছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানকে বারংবার অবিহিত করলেও কোনো সমাধান পাইনি। এক্ষেত্রে অনেক শিক্ষকের অলসতার জন্য আমাদের ফলাফল পেতে দেরি হয়। আমরা চাই এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হোক। তা না হলে ক্যাম্পাস খুললে আমরা এ নিয়ে আরও জোরদার পদক্ষেপ নেব।
২০১৭-১৮ সেশনের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের বিভাগের রেজাল্ট দিতে সবসময়ই ৮-১০ মাস সময় লাগে। সেজন্য আমরা এটাকেই ধরে নিয়েছি। যদিও আমরা নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। আমাদের ব্যাচের ঢাবির শিক্ষার্থীরা ২০২৩ সালের বার কাউন্সিলের পরীক্ষা দিয়েছে আমরা পারিনাই। এছাড়া বিভিন্ন চাকরিতে যেতে পারি না যেখানে অনার্স ও মাস্টার্স ফলাফল দেখাতে হয়।
বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রকিবা নবী বলেন, এই সমস্যাটা অনেকদিন ধরেই চলে আসছে। এর সমাধান প্রকল্পে আমরা কাজ করছি। এখানে কয়েকজন শিক্ষকের দেরিতে ফলাফল জমা দেওয়ার কারণেই মূলত ফল প্রকাশে দেরি হয়।
তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান বলেন, এই সমস্যাটা শুধু যে শিক্ষকদের অলসতার জন্য হচ্ছে এমন না। প্রশাসন চাইলেই এখানে ব্যবস্থা নিতে পারতো। ফলাফলের ক্ষেত্রে ডিজিটাল সিস্টেম চালু করা হলে এই সমস্যাটা অনেকটাই কমে আসবে। সেই সাথে অনেকদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমরা তেমন কাজ করতে পারিনি। আশা করছি অতি শীঘ্রই এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।
আইন অনুষদের ডিন ও মাস্টার্সের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে ৫-৬ মাস দেরি হওয়াটা রীতি হয়ে গেছে। শিক্ষকদের অবহেলার জন্য ফল প্রকাশ করতে দেরি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কয়েক মাস ধরেই শিক্ষকদের আন্দোলন ও ছাত্রদের আন্দোলনের জন্য ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা ছিল। অফিসের কাজও প্রায় বন্ধই ছিল। এ সময় শিক্ষকেরাও তাদের কাজ ঠিকমতো করেনি। ক্যাম্পাস স্বাভাবিক হলে আশা করি এ নিয়ে দ্রুত সমাধানে কাজ করবো।