ক্যাম্পাসে আওয়ামীপন্থী কর্মচারীকে না পেয়ে চবি পড়ুয়া মেয়েকে মারধর-হেনস্থা
- চবি প্রদায়ক
- প্রকাশ: ১১ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪৩ AM , আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০১:২৩ AM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রীকে মারধর ও হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক কর্মচারী বিরুদ্ধে। শনিবার (১০ আগস্ট) ক্যাম্পাসের দুই নাম্বার এলাকার বাগিচা ভিলার সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত কর্মচারী আবু তৈয়ব চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসুর) টেবিল বয় হিসেবে কর্মরত।
তিনি জামায়াত ইসলামীর রাজনীতির সাথে জড়িত বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। তবে তার ছোট ছেলে জামিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখার কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি রেজাউল হোসেন রুবেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
জানা যায়, রসায়ন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের তারানা ইসলামের বাবা শাহ আমানত হলের অফিস পিয়ন মিজানুর রহমান আওয়ামী লীগ সমর্থক। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গা ঢাকা দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। মিজানুর রহমানও গা ঢাকা দেন বলে জানা গেছে। এদিকে, ৫ আগস্টের পূর্ব শত্রুতার জেরে মিজানুর রহমানকে খুঁজতে থাকে আবু তৈয়ব। তাকে না পেয়ে টিউশনে যাওয়ার পথে শনিবার তারানা ইসলামকে মারধর করে আবু তৈয়ব।
প্রত্যক্ষদর্শী আশেকুর রহমান বলেন, দুপুর আনুমানিক ৩টার দিকে একটা মেয়ের চিৎকার শুনে বেলকনিতে আসি। দেখতে পাই মাঝ বয়সী একজন ব্যক্তি একজন মেয়েকে মারধর করছে, তা দেখে আমি দৌড়ে এসে উনাকে জিজ্ঞেস করি আপনি মেয়েটাকে মারছেন কেন। তখন লোকটা আমাকে তুই-তুকারি করতে থাকে।
ভুক্তভোগী রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী তারানা ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ৫ আগস্টের পর আব্বু পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাই সামনের দরজা বন্ধ রেখে পেছনের দরজা দিয়ে চলাচল করি। আমি আড়াইটার দিকে টিউশন করানোর জন্য বের হলে আবু তৈয়ব আমাকে জিজ্ঞেস করে কই থেকে বের হয়েছিস?
“আমি উনাকে চিনি নাই। আমি বলি, আংকেল আমি বাসা থেকে বের হইছি। উনি বলেন, কয়? বাসায় লোক পাঠিয়েছিলাম কাউকে পায় নাই ক্যান?”
তিনি বলেন, আমি বলি, আংকেল আমাদের একটু সমস্যা হচ্ছে। বাসায় কেউ নাই তাই সামনের দরজা অফ করে রাখছি, পেছনের দরজা দিয়ে চলাচল করছি। উনি আমার কাছে জানতে চান আমার আব্বু কোথায় তখন আমি কেন এবং তার নাম জানতে চাইলাম উনি বলেন, ‘তোর আব্বুকে বলিস আমি আজরাইল। তোর আব্বুকে না পাইলে তোদের সবাইকে জবাই করে দিবো।’
তারানা ইসলাম আরও বলেন, আমি সামনে হেঁটে চলে যেতে চাইলে উনি আমার পিছু নেন। বলেন তোদের চলাফেরা স্বাধীনতা দিয়েছে কে। আমি বললাম আমার আব্বু আওয়ামী লীগ করে বলে কি আমাদের স্বাধীনতা নেই। তারপর উনি আমাকে বলে এখন বাসায় যা, তোর বাপে অনেক জ্বালিয়েছে। তার কিছুক্ষণ পর আমি মোবাইল বের করে লুকিয়ে ভিডিও করতে চাইলে উনি মোবাইল কেড়ে নিয়ে আমাকে জোরে জোরে থাপ্পড় দেন। পরে এক ভাইয়া তা দেখে দৌড়ে এসে আমাকে রক্ষা করে। উনি সে ভাইয়াকেও হুমকি দেন। এখন আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মচারী আবু তৈয়বের বক্তব্যে পাওয়া যায়নি। তবে এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে চবি কর্মচারী ইউনিয়ন থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে জানা গেছে।