প্রশাসনের শাস্তির ভয়ে চাকরি ছেড়েছেন শিক্ষক জাহিদুল করিম: জাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিম প্রশাসনের শাস্তির আশঙ্কা থেকে চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন বলে দাবি করেছে প্রশাসন। তাদের ভাষ্য, পরীক্ষা কমিটি পুনর্গঠন ও পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের সহযোগিতার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। যার কারণে তিনি প্রশাসনের শাস্তির চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এমন দাবি করা হয়েছে। বিবৃতিতে তার বিরুদ্ধে গঠিত আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলবে এবং তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর তদনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রশাসনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিমের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ২৮ আগস্ট থেকে আনুষ্ঠানিক তদন্ত কমিটির কাজ চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় ২০২৪ সালের ২৫ জুলাই ই-মেইল যোগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে একটি পত্র প্রেরণ করেন।
এদিকে, শিক্ষক জাহিদুল ২০২১ সালের ৭ আগস্ট থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন। তিনি মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্যও ২ বছর ছুটি ভোগ করেছেন। পিএইচডি এবং মাস্টার্স ছুটি মিলিয়ে তিনি ইতোমধ্যে প্রায় ৬ বছর শিক্ষাছুটি অতিবাহিত করেছেন।
জাবির বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২১ সালের ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের এমবিএ ৪র্থ ব্যাচের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের ২য় সেমিস্টার পরীক্ষা কমিটি পুনর্গঠন এবং পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের সহযোগিতার অভিযোগে তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি জাহিদুল করিমের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন গ্রহণপূর্বক উক্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রদানের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশের ৫(ক) (২) উপধারা মোতাবেক আনুষ্ঠানিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যার কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় তিনি চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।
ওই ঘটনার শাস্তির ভয়ে তিনি চাকরি ছেড়ে বলে মনে করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষক জাহিদুল করিম তদন্তে শাস্তির আশঙ্কা থেকে চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। একইসাথে তিনি উদ্দেশ্যমূলক ও দুরভিসন্ধি থেকে দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাকে কারণ হিসেবে অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ করেছেন।
এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদের কথা জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতির কথা জানান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর পাঠানো এক পত্রের মাধ্যমে অব্যাহতির বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে জাবি প্রশাসনের দেওয়ার বিবৃতি প্রসঙ্গে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।