রাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলেন শিক্ষার্থীরা
কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটক অবরোধ করে এ ঘোষণা দেন তারা।
এ সময় হল প্রশাসনের কাছে আরও পাঁচ দফা দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি আজীবন নিষিদ্ধ করতে হবে। লিখিতভাবে আজ ২টার মধ্যে সিন্ডিকেটে পাস করে, প্রভোস্টদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। ক্যাম্পাসে যেন কোনো সন্ত্রাসী ঢুকতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু হলসহ যে সব হল থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, সে সব হলের প্রভোস্টদের পদত্যাগ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, হল বন্ধের ঘোষণা বেলা ২টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে এবং ক্যাম্পাস ছুটির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। মেস মালিকদের চিঠি দিয়ে মেসগুলো খোলার ব্যবস্থা করতে হবে। তৃতীয়ত, আজ দুপুর ২টার মধ্যে প্রশাসনিকভাবে মিডিয়ার উপস্থিতিতে হলে হলে অভিযান চালিয়ে ক্যাম্পাসকে নিরস্ত্র করতে হবে। চতুর্থত, চলমান আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের যাতে কোনো ধরনের মামলা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
পঞ্চমত, হলের সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে প্রভোস্টকে একদিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের হলের সিট বরাদ্দ দিতে হবে। দখলকৃত (ছাত্রলীগের) সিটগুলোতে সাধারণ ছাত্রদের জন্য গণরুমের ব্যবস্থা করতে হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম রেজা বলেন, ‘আমরা আমাদের কিছু যৌক্তিক দাবি নিয়ে প্রশাসন ভবন অবরোধ করেছি। আমরা প্রত্যেকটি হলের হল প্রশাসনের কাছে ৫ দফা দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। আমাদের দাবি যথাযথভাবে মূল্যায়ন না করা হলে আমরা প্রশাসন ভবন ত্যাগ করব না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেই আমরা এখান থেকে সরে যাব, এর আগে নয়।’
আরো পড়ুন: বেরোবি ছাত্রলীগের অনেক নেতার পদত্যাগ, ছাত্র রাজনীতি চান না শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীদের এমন দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, দেশে চলমান পরিস্থিতিতে ছাত্ররা হল প্রশাসনের কিছু দাবি জানায়। হলের ভেতরে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে সিট বাণিজ্য এবং শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
তাদের এ দাবি যৌক্তিক মনে করে হল প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহবায়কের উপস্থিতিতে হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো শিক্ষার্থী চাইলে হলের বাইরে রাজনীতি করবে। কিন্তু হলে করতে পারবে না।