এফ রহমান হলে ছয় শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের মারধর, তিনজনকে হল ছাড়া
কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাওয়ার ও ছবি পোস্ট করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের ছয় শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করেছে সংগঠনটির পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। এদের মধ্যে তিনজনকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৫ জুলাই) বিভিন্ন সময়ে এসব মারধরের ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন- ২০২০-২১ সেশনের আব্দুল বাসিত, শাকাওয়াত হোসেন সাকু, লিমন খান রানা, মোর্শেদ ইসলাম। ২০১৬-১৭ সেশনের ফারুক ও তাওহীদ ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাকাওয়াত ও বাসিতকে খুব বেশি মারধর করা হয়েছে। শাকাওয়াতকে রুমে গিয়ে মারা হয়েছে। বাসিত নামের ওই শিক্ষার্থী হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। তখন তার ফোন চেক করে বেধড়ক মারধর করা হয়।
এদের মধ্যে লিমন, শাকাওয়াত ও মোর্শেদকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মারধরে সব গ্রুপের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এছাড়াও হলের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ধরে ধরে মোবাইল ফোন চেক করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মারধরে অংশ নেওয়া পদপ্রত্যাশীরা হলেন- কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী বলে পরিচিত নাহিদ, ইমরান, আসিফ, শুভ, নুহাস ও আলিফ।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারীরা বলে পরিচিতরা হলেন- শাহারাত, নাসিফ, শওকত, রিফাত ও লিয়ন। ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি শয়নের অনুসারীদের মধ্যে ছিলেন ফজলে রাব্বি এবং সাধারণ সম্পাদক সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে ছিলেন লালন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, হল শাখা ছাত্রলীগের এমন তৎপরতায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পদপ্রত্যাশীরা অন্যান্য শিক্ষার্থীদেরও মারার জন্য খোঁজ খবর নিচ্ছেন, যারা কোটা আন্দোলনে গিয়েছিল। অনেকেই হল ছেড়ে বাড়ির দিকে রওয়ানা দিচ্ছেন।
এর আগে, সোমবার দিনভর কোটা সংস্কারপন্থী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এর জেরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে সহিংস পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে হল প্রভোস্টের নির্দেশনা দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।